উচ্চ রক্তচাপ অনেক রোগেরই অনুঘটক।   হৃদরোগ থেকে স্ট্রোক, ডিমেনশিয়া থেকে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ - ইত্যাদি নানা অসুখের সঙ্গেই জড়িয়ে উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস। Covid - 19 এর পরপর  হু একটি গাইডলাইন প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়েছিল, ব্লাড প্রেসার ১৪০ বাই ৯০ না হওয়া অবধি, ওষুধ খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা যেতেই পারে। তবে চিকিৎসকরা অনেকেই দ্বিমত পোষণ করেছিলেন।  আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন (AHA) নানারকম পরীক্ষা নিরীক্ষার পর নতুন একটি গাইডলাইন প্রকাশ করেছে। চিকিৎসকদের মতে,  ভারতীয়দের মধ্যে জিনগতভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।  তাই ভারতীয়দের বাড়তি সতর্কতার প্রয়োজন। প্রেসার মাপার সময় দুটি পরিমাপ নেওয়া হয়।  সিস্টোলিক প্রেসার (উপরের সংখ্যা) এবং ডায়াস্টোলিক প্রেসার (নীচের সংখ্যা)। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন (AHA) এর নতুন গাইডলাইন অনুসারে, আদর্শ রক্তচাপ ১১৫-১১৯/৭০-৭৯ মিমিএইচজি হওয়া উচিত। অর্থাৎ কারও রক্তচাপ ১২০/৮০-র একটু বেশি হলেই নজরে রাখতে হবে।  

প্রেসারে ক্ষতি  কী কী ? 

১২০ থেকে ১২৯ মিমি এইচজি যদি কারও সিস্টোলিক প্রেসার হয়, তাহলে উচ্চ রক্তচাপ হিসেবেই ধরা হবে। অন্যদিকে ডায়াস্টোলিক প্রেসার যদি ৮০ মিমি এইচজির বেশি হয়, তাহলেই রক্তচাপ নজরে রাখতে হবে। ১৩০ থেকে ১৩৯ মিমি এইচজি যদি সিস্টোলিক প্রেসার হয়, কিংবা ৮০ থেকে ৮৯ মিমি এইচজি ডায়াস্টোলিক প্রেসার থাকে, তাহলে যথেষ্ট সতর্ক হওয়ার দরকার আছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, উচ্চ রক্তচাপ মস্তিষ্কের ছোট-ছোট রক্তনালীগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।  

কখন থেকে সতর্ক হওয়া দরকার?

উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের অসুখ নয়।  ট্রেন্ড এখন ভয়ংকর দিকে গড়াচ্ছে। কুড়ির কোঠায় বয়স, এমন অনেক ছেলে-মেয়েও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন।  প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকা মানসিক চাপ, কাজের স্ট্রেস, ইঁদুরদৌড়, মধ্য কুড়ি থেকেই ডেকে আনছে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা। চিকিৎসকরা বলছেন, যাঁদের পরিবারে হাই ব্লাড প্রেসারের ইতিহাস আছে, তাঁদের সতর্ক হতে হবে কম বয়স থেকেই।                     

বিপি মনিটরিংয়ের পাশাপাশি, কম বয়স থেকেই লাইফস্টাইল মডিফিকেশন শুরু করতে হবে সময় থাকতেই, বলছেন চিকিৎসকরা। ইদানিং মাঝ ২০তেই হাইপারটেনশনের রোগী সংখ্যায় প্রচুর। অবহেলায় ঘটে যেতে পারে বড় বিপদও, তেমন উদাহরণও ভুরি ভুরি। তাই সতর্ক হতে হবে আরও বেশি।