কলকাতা : তেল কি টেররিস্ট ? সবাই কি ভীষণ ভয় পাব ? তেলের কোনও জিনিস দেখলে দূরে থাকব?  ঠিক করে জানতে হবে, কোন তেল খাব, কীভাবে খাব, কতটা খাব? এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট ড. অনন্যা ভৌমিক। 
' হার্টের ব্যামো থেকে কোলেস্টেরলের গ্রাফ চড়চড় করে বেড়ে যাওয়া - সবকিছুর জন্য দায়ী তেল ! তেল খেলেই শরীরের ভয়ানক ক্ষতি, এমন একটা ধারণা আছে অনেকেরই। কিন্তু সেটা ভুল। জানতে হবে তেল কতটা খেতে হবে, কোন তেল খেতে হবে।  ', জানালেন ড. অনন্যা। 


ভিটামিনের প্রয়োজনে 
তিনি বলছেন, ' তেলও শরীরের বড্ড প্রয়োজন । কোলেস্টেরল থাকলেও  তেল ডায়েট থেকে এক্কেবারে বাদ দেওয়া চলবে না। কারণ তেল ছাড়া অনেক ভিটামিন শরীরের কাজেই লাগে না। যে ভিটামিনগুলি ফ্যাট সলিউবল, সেগুলির উপকারিতা পেতে সামান্য তেলও খাওয়া প্রয়োজন। ' 

মেদ কমাতে তেল বাদ ?
না। মেদ কমানোর কড়া ডায়েটে থাকলেও তেল খাওয়া শূন্যে নামিয়ে আনা যাবে না। তাবলে সরষের তেল বাদ দিয়ে একগাদা অলিভ অয়েলে রেঁধে ফেলবেন না। আবার সরষের তেল বাদ দিয়ে সব রান্না সাদা তেলে করে ফেলবেন না। পুষ্টিবিদের পরামর্শ, সারাদিনে যতটিকি তেল খাওয়া হয়, তা মূলত রান্না করার জন্য ব্যবহৃত তেল। বাঙালিরা নানা রকম খাবার খান। তাঁর কোনওটা রান্না করুন সরষের তেল দিয়ে, কোনওটা সাদা তেল দিয়ে, কোনওটা আবার অলিভ অয়েলে


হালকা স্যঁতে করে ফেলুন।

কতটুকু খাবেন তেল?
বাঙালিদের রান্নাঘরে মোটামুটি ব্যবহার হয় সরষের তেল, সাদা তেল. সয়াবিন তেল. অলিভ অয়েল। প্রতিটির আলাদা পুষ্টিগুণ। সারাদিন একেক সময় , একেক রকম তেলে রান্না করতে হবে। তবে রান্নায় তেলের ব্যবহারে রাশ টানুন। তাহলে একদিকে যেমন শরীর পাবে তেলের উপকার, তেমনই অন্যদিকে অতিরিক্ত তেল খেয়ে অসুখ-বিসুখও হবে না । 


সারাদিন ভাজাভুজি নয়!
পরিমিত তেল খান। যদি অন্য কোনও অসুস্থতা না থাকে পুষ্টিবিদের পরামর্শ রোজ সামান্য ঘি ও খেতে পারেন। ঘি না মাখন, এই নিয়ে ধন্দে আছেন? অনন্যার পরামর্শ মাখনের থেকে ঘিয়ের পুষ্টিগুণ বেশি।


সাবধান !
বেঁচে যাওয়া তেল দিয়েই ফের রান্না করেন? ভয়ঙ্কর ক্ষতি করছেন ! ব্যবহৃত তেল অন্য কোনও রান্নায় কাজে লাগানো চড়া বাজারে খুব স্বাভাবিক। কিন্তু পুষ্টিবিদ বলছেন, একবার ব্যবহার করা, ধোঁয়া ওঠা, কালো হয়ে যাওয়া তেল আর ব্যবহার নয়।
তেল গরম করার সময় ধোঁয়া ? ফেলে দিন! মনে হবে, অপচয় হচ্ছে। কিন্তু শরীর অনেক খারাপ রোগের হাত থেকে বাঁচবে। 
কোলেস্টেরল হাই ? 
আপনার কি কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি? ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেশি? তবে আপনার বরাদ্দ দিনে  ছোট ১ চামচ তেল ! আর ঘি, মাখন, বনস্পতিতে এক্ষেত্রে বিগ NO !

হার্টের রোগী ? 
হার্টে ব্লকেজ ? হার্টের অন্য সমস্যায় ভুগছেন কি ? কিংবা শরীরের নানান প্যারামিটার দেখে ডাক্তার বারবার হার্ট নিয়ে সতর্ক করেছেন? পরিবারে যদি হার্টের অসুখের ইতিহাস থেকে থাকে, তাহলে সতর্ক আগে থেকেই হতে হবে। সেক্ষেত্রে 
তেল খাওয়ায় টানুন রাশ । আপনার বরাদ্দ দিনে ২-৩  ছোট চামচ তেল !


ফ্যাটি লিভারের সমস্যা 
ফ্যাটি লিভারের সমস্যা ? এক্ষেত্রে তেল খাওয়া এক্কেবারে কমিয়ে ফেলুন। 

 শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট ? 
আপনি কি স্থূলকায় ?  আপনারও সারাদিনে বরাদ্দ দিনে ২ ছোট চামচ তেল !
তবে আপনি কি ফিট অ্যান্ড ফাইন হন, স্লিম অ্যান্ড ট্রিম দেহের অধিকারী হন, অন্য কোনও অসুখে না ভোগেন , তাহলে আপনি খেতেই পারেন দিনে ৪ ছোট চামচ তেল।  পরিমান বুঝে তেল খান, তেল খাওয়ান !