নয়াদিল্লি: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা ভালমতো টের পেয়েছে ভারত। এরমধ্যেই, শুরু হয়ে গিয়েছে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা। অনেকে বলেও দিয়েছেন, দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ অনিবার্য। ফলে, সেই সময় ভ্যাকসিন নেওয়ার পাশাপাশি, নিজেকে রক্ষা করতে আরও অনেক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। মাথায় রাখতে হবে, নিজেকে দেখভালের দায়িত্ব নিজের। 


ভারতে বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলি সবকটিই প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। শিশুদের ওপর ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে। ফলে, শিশুদের টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু হতে এখনও কিছুটা সময় লাগবে। এই পরিস্থিতিতে তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলা করার কয়েকটা পন্থা বলেছেন অ্যাড্রোয়াত বায়োমেড প্রাইভেট লিমিটেডের সহ-প্রতিষ্ঠাতা তথা ডিরেক্টর সুশান্ত রাওরানে। 


ব্যায়াম


সক্রিয় থাকলে শারীরিক সক্ষমতা বাড়ে। পাশাপাশি, মানসিক স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ে। ফলে, ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনসনের মতো রোগের সম্ভাবনা কমে। বয়স্কদের হাঁটার পরামর্শ দেওয়া হয়। অন্যদিকে, যুবক ও তরুণদের হাই-ইনটেনসিটি ওয়ার্কআউট করাই বাঞ্ছনীয়। এসব ক্ষেত্রে সকাল বা বিকেলের সময় বেছে নেওয়া উচিত। 


রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি


কী খাচ্ছেন, তার ওপর নজর দিন। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন ও ভাল কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খান। যে খাবারে জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, কুরকুমিন, গ্লুটাথিওন বা এন-অ্যাসিটাইলসিস্টিন রয়েছে, সেগুলি ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এগুলির মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামাটরি, অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিঅক্সিড্য়ান্ট সহ রোগ-প্রতিরোধের বিভিন্ন উপাদান।


কোভিড বিধি পালন


ভিড় এড়িয়ে চলুন। মাস্ক পরুন। ঠিক সময়ে ভ্য়াকসিন নিন। নিজের শরীরের যত্ন নিন। কোনও উপসর্গ দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আপনার শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা হল একটা ঢাল। একে মজবুত করুন।


স্ট্রেসমুক্ত থাকুন


এর জন্য বিভিন্ন মাধ্যম আছে। যেমন ধ্যান, যোগা, গান শোনা, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, ছবি আঁকা ইত্যাদি। শারীরিক ও মানসিক স্ট্রেস শরীরে এমন কিছু রাসায়নিক উৎপাদন করে, যা প্রদাহ সৃষ্টি করে। কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে উচ্চ স্ট্রেস লক্ষ্য করা গিয়েছে। 


ধূমপান ও মদ্যপান কমান


সিগারেটের ধোঁয়ায় তৈরি হওয়া টক্সিন ক্ষতিকারক। কারণ তা ফুসফুসে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি করে। অতিমারীর সময় তা ভয়াবহ হতে পারে। সুস্থ লিভার বিভিন্ন সংক্রমণ ও টক্সিনের মোকাবিলা করে। কিন্তু, মদ্যপান যাঁরা করেন, তাঁদের লিভার দুর্বল হয়। তাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অন্যদের তুলনায় কম। 


রক্তচাপ ও রক্তে সর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন


যাঁদের ডায়াবেটিস, হাইপারটেনসন, ওবেসিটি রয়েছে, বা যাঁদের একবার স্ট্রোক হয়েছে, তাঁদের মধ্যে করোনায় মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ফলে, রক্তে সর্করা বা ব্লাড সুগারের মাত্রা ও রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার -- এই দুই জিনিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ওষুধ ঠিক সময় নিন। নুনের ব্যবহার কমান, ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ করুন আর খেয়েই শুয়ে পড়বেন না।