কলকাতা: কারও সামুদ্রিক খাবারে অ্যালার্জি তো কারও কোনও সবজিতে। সেই খাবার জোর করে খেলে শ্বাসকষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আবার গায়ে ফোলা চাকা চাকা দাগও দেখা দেয়। তাই খাবারের নাম শুনেই অনেকে অ্যালার্জির ভয়ে পিছিয়ে আসেন। এমনকি খাবারের গন্ধতেও অনেকে অ্যালার্জির (allergy) ভয় পান। কিন্তু আমাদের এই আচরণ কে নিয়ন্ত্রণ করছে? কীভাবে শরীর বুঝে নিচ্ছে এতে শরীরের বিপদ রয়েছে? 


ব্রেনকে বলে দিচ্ছে কে?


আমাদের মস্তিষ্কই আমাদের কোনও কিছু করতে বলে‌। একই সঙ্গে সেই কাজ‌ করতে বাধাও দেয়। কিন্তু সে খবর পাচ্ছে কী করে কোন খাবারে আমার বিপদ ? চিকিৎসকদের কথায়,  এই খবর পৌঁছে দিচ্ছে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ‌ (immunity power)। ইমিউনিটিই বলে দিচ্ছে কোন খাবার বা জিনিস থেকে শরীরের বিপদ হতে পারে। সে অনুযায়ী শরীর আচরণ করে চলেছে (influencing behaviour)।


ইমিউনিটি কীভাবে কাজ করছে?


চিকিৎসকদের কথায় এক্ষেত্রে ইমিউনোগ্লোবিন ই নামে একটি প্রোটিনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। ইমিউনোগ্লোবিন ই বা IgE একটি রোগ প্রতিরোধকারী কোষ। যা রক্তের মাস্ট সেল ও অন্য শ্বেত রক্তকণিকাকে উত্তেজিত করে তোলে।  এর পরেই মস্তিষ্কে পৌঁছে যায় বিপদের খবর। 


ইঁদুর পরীক্ষায় কী দেখা গেল?


ইয়েল স্কুল অব মেডিসিনের এই গবেষণাটি ইঁদুরের উপর করা হয়েছে। ইঁদুরের দুটি দলের কন্ট্রোল ট্রায়াল করা হয়। তাতে এক পক্ষ ইঁদুরকে ডিমে থাকা ওভা প্রোটিনের গন্ধ শোঁকানো হয়। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিকমতো কাজ করে। এর ফলে মস্তিষ্ক তাদের বিপদের বার্তা দেয়। অ‌্যালার্জির ভয়ে পিছিয়ে যায় ইঁদুরগুলো। তবে অন্য দলের ইঁদুরের ইমিউনোগ্লোবিন ই বা IgE-কে নিস্ক্রিয় করে দেওয়া হয়।‌ যার ফলে ওভা প্রোটিন দেখে আর পিছিয়ে যায়নি ইঁদুরগুলো। কারণ ব্রেনে বিপদের বার্তাই পৌঁছায়নি!


কী বলছেন গবেষকরা?


ইয়েল স্কুল অব মেডিসিনের ইমিউনোবায়োলজির স্টার্লিং প্রফেসর রাসলান মেঝিটভ বলেন, রোগ প্রতিরোধ শক্তি মানুষের আচার আচরণকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করে। এটিই মস্তিষ্কে আগাম গিয়ে বিপদের বার্তা দেয়। শুধু অ্যালার্জি নয়, আরও অনেকের রোগের আগাম আঁচ দেয়  আমাদের ইমিউনিটি। বলা যেতে পারে, প্রকৃতির প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে আগাম খবর দিয়ে ইমিউনিটিই আমাদের লড়াই করতে সাহায্য করে।


আরও পড়ুন: Vitamin E for hair growth: শীত পড়তেই হু হু করে চুল ঝরছে? ভিটামিন E এভাবে লাগালেই ঘন চুলে ভরবে মাথা