অধিকাংশ মানুষ প্রায়শই কিডনি রোগকে ক্লান্তি, পা ফুলে যাওয়া বা প্রস্রাবের পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত করে। তবে এটি প্রায়শই চোখে শুরু হয়। কারণ কিডনি এবং চোখ উভয়ই শরীরের ছোট রক্তনালী এবং তরল ভারসাম্যের উপর নির্ভরশীল। যখন কিডনি সঠিকভাবে কাজ করে না, তখন এর প্রভাব চোখেও অনুভূত হতে পারে। ক্রমাগত ফোলাভাব, ঝাপসা দৃষ্টি, লালভাব, জ্বালা বা রঙের ধারণার পরিবর্তন - এই সবই গভীর সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে। এই পরিবর্তনগুলি প্রথমে হালকা, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও খারাপ হতে পারে। যদি এই লক্ষণগুলির সঙ্গে ক্লান্তি বা ফোলাভাব থাকে, তাহলে কিডনি এবং চোখ উভয়ের পরীক্ষা করানো গুরুত্বপূর্ণ। আসুন সেগুলি বিস্তারিতভাবে জেনে নিই।

Continues below advertisement

বেশিরভাগ মানুষ বিশ্বাস করেন যে, কিডনি রোগ কেবল ক্লান্তি, ফোলাভাব বা প্রস্রাবের পরিবর্তনের মাধ্যমেই ধরা পড়ে। কিন্তু বাস্তব হল, এর প্রাথমিক লক্ষণগুলি চোখেও দেখা যেতে পারে। ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশনের মতে, কিডনি হল শরীরের ফিল্টার সিস্টেম এবং চোখ অত্যন্ত সূক্ষ্ম রক্তনালীগুলির উপর নির্ভর করে। কিডনির সমস্যা তরল ভারসাম্য বা রক্তনালীগুলিকে প্রভাবিত করার সঙ্গে সঙ্গেই চোখের পরিবর্তনগুলি লক্ষণীয় হয়ে ওঠে। কিডনির সমস্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি, চোখের আর্দ্রতা, অপটিক স্নায়ু এবং এমনকী রঙিন দৃষ্টিশক্তিও প্রভাবিত হতে পারে। কখনও কখনও এই লক্ষণগুলি সাধারণ চোখের রোগের মতোই দেখা দেয়, যার ফলে এই সমস্যা নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে। এই লক্ষণগুলি উপেক্ষা করলে আরও খারাপ হতে পারে। এখানে চোখের সঙ্গে সম্পর্কিত পাঁচটি লক্ষণ দেখে নেওয়া যাক, যেগুলিকে হালকাভাবে নিলে গুরুতর জটিলতা দেখা দিতে পারে:

চোখ ফুলে থাকা 

Continues below advertisement

কখনও কখনও চোখ ফুলে যাওয়ার কারণ হল রাত জেগে থাকা বা অতিরিক্ত নুন খাওয়া। তবে, যদি সারা দিন ধরে ফোলাভাব চলতে থাকে, তাহলে এটি কিডনিতে প্রোটিন লিকেজ হওয়ার লক্ষণ হতে পারে। যখন কিডনি প্রোটিন ফিল্টার করতে অক্ষম হয়, তখন এটি প্রস্রাবের সঙ্গে নির্গত হয়, যার ফলে চোখের চারপাশে ফোলাভাব দেখা দেয়। যদি ফোলা ফোলা বা অতিরিক্ত ফেনাযুক্ত প্রস্রাব হতে থাকে, তাহলে অবিলম্বে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

ঝাপসা বা দ্বিগুণ দৃষ্টি

হঠাৎ ঝাপসা দৃষ্টি বা দু'টো-দু'টো দেখা ছোট রেটিনার শিরাগুলির ক্ষতির লক্ষণ হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস, কিডনি ফেলিওরের দু'টি বড় কারণ, রেটিনার শিরাগুলিরও ক্ষতি করে। গুরুতর ক্ষেত্রে তরল জমা, রেটিনা ফুলে যাওয়া, এমনকী দৃষ্টিশক্তি কমেও যেতে পারে। যদি আপনার ডায়াবেটিস হয় বা উচ্চ রক্তচাপ থাকে এবং আপনার দৃষ্টিশক্তিতে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়, তাহলে কিডনির কার্যকারিতা পরীক্ষা করাও প্রয়োজনীয়।

চোখের শুষ্কতা, জ্বালাপোড়া, বা জ্বালা

চোখের ঘন ঘন শুষ্কতা বা চুলকানি কেবল আবহাওয়া বা স্ক্রিন টাইমের কারণে নয়। কিডনি রোগে আক্রান্ত বা ডায়ালিসিস গ্রহণকারী রোগীদের ক্ষেত্রে চোখ শুষ্কতা একটি সাধারণ বিষয়। ক্যালসিয়াম-ফসফরাসের ভারসাম্যহীনতা, অথবা শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমা হওয়ার ফলে অশ্রু উৎপাদন কমে যেতে পারে। যদি আপনার চোখ লাল, শুষ্ক বা কারণ ছাড়াই চুলকানি হয়, তাহলে আপনার কিডনি পরীক্ষা করানো গুরুত্বপূর্ণ।

তথ্যসূত্র : এবিপি নিউজ

ডিসক্লেইমার: লেখায় উল্লেখিত দাবি বা পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। এটি মেনে চলার আগে অবশ্যই সরাসরি বিশেষজ্ঞ/চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।