নিউইয়র্ক: হাজার হাজার কিডনি প্রতিস্থাপন রোগীর জন্য আশার আলো। নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি ল্যাঙ্গোন ট্রান্সপ্লান্ট ইনস্টিটিউটের (New York University Langone Transplant Institute) চিকিৎসকরা সম্প্রতি একটি জেনেটিকালি ইঞ্জিনিয়ারড শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করে মানব শরীরে। ৩২ দিন পার হয়ে গেলেও দিব্য কাজ করছে সেই কিডনি।  স্নায়বিক মানদণ্ডের ওই ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে আগেই ( Brain Dead )। এখন ভেন্টিলেটর সাপোর্টে (ventilator support) রয়েছেন ওই  ব্যক্তি। কাজ করছে হৃদস্পন্দন।  এক মাস ধরে কিডনির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার পর, বিজ্ঞানীরা মানব শরীরে শূকরের কিডনি কতটা কাজ করবে সেই বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন। গবেষকেরা মনে করছেন, কিডনি দুষ্প্রাপ্যতা কমাতে এই গবেষণা উল্লেখযোগ্য । 

নিউইয়র্কের হাসপাতালে এই প্রক্রিয়াটি, ১৪ জুলাই সম্পন্ন হয়। হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান এবং NYU ল্যাঙ্গোন ট্রান্সপ্লান্ট ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর রবার্ট মন্টগোমেরির ( Robert Montgomery ) নেতৃত্বে, NYU ল্যাঙ্গোন-এ এটি পঞ্চম জেনোট্রান্সপ্ল্যান্ট (fifth xenotransplant )ছিল। ২০২৩ এর সেপ্টেম্বর মাস অবধি বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হবে।  

এই পরীক্ষা প্রমাণ করে, শূকরের কিডনির শুধুমাত্র জেনেটিক পরিবর্তনের করে এবং পরীক্ষামূলক ওষুধ বা কোনও বাড়তি যন্ত্রপাতি ছাড়াই ৩২ দিন মানুষ শরীরে সচল রইল।  এর ফলে যাঁদের কিডনির প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন, তাঁরা ভবিষ্যতে সুবিধে পেতে পারেন।  

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শূকরেরে কিডনি মানবদেহে প্রতিস্থাপন সম্ভব হলে বহু মানুষের উপকার হবে। প্রতিবছর দাতা না পাওয়ার কারণে কিডনির অসুখে মারা যান অনেকে। তাদের ক্ষেত্রে আশার আলো হতে পারে  শূকরের কিডনি। ২০২১ সালের শেষাশেষি পরপর এই  genetically modified pig kidney transplant হয়। ২০২২ এর গ্রীষ্মেও এই হাসপাতালে genetically engineered pig heart transplant করা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে অনেক বাধা সৃষ্টি হয়। সেই কিডনিগুলো দুই থেকে তিন দিন সক্রিয় ছিল। এখন এই প্রতিস্থাপিত কিডনি দীর্ঘমেয়াদে কাজ করে কি না সেই দিকেই তাকিয়ে বিশেষজ্ঞরা। 

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শূকরের দেহে এক বিশেষ ধরনের গ্লুকোজ থাকে, সেই গ্লুকোজের জন্যই মানবদেহে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন হলে ঠিক মতো কাজ করে না। তবে সম্প্রতি যে প্রতিস্থাপন হয়েছে, তাতে বিজ্ঞানীরা জিনের চরিত্রে বদল ঘটায়। তারপর সেই শর্করা শূকরের দেহ থেকে সরিয়ে নেয়। এখন এই গবেষণা কতটা সাফল্য পায়, তা বলবে সময়।