মাথাব্যথা থেকে পিঠে ব্যথা। হাঁটুর ব্যথা থেকে দাঁতে টনটনে ভাব। অনেকের কাছেই সলিউশন একটাই। পেনকিলার। চেনা পরিচিত নামের একটা ট্যাবলেট টুক করে কিনে খেয়ে নেওয়া। কেউ কেউ তো ব্যাগেই রেখে দেন পেনকিলারের স্ট্রিপ। রোজই হয়ত খেয়ে চলেছেন, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই! ব্যথারও উপশম হচ্ছে। কিন্তু এই ওষুধে কী কী ক্ষতি হচ্ছে , জানেন কি ? চিকিৎসকরা বলছেন, প্রায়শই অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার অভ্যেস কল্পনার চেয়েও বেশি ক্ষতিকর হতে পারে। পেনকিলার যাঁরা প্রায়ই খেয়ে থাকেন, তাঁদের শরীরে অনেক ওষুধ আর কাজ না-ও করতে পারে। অনেক সময় এমন রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়ে যায়, সেই ওষুধ আর ব্যথার উপশম করতে পারে না।
কোন কোন ওষুধে বিপদ?
চিকিৎসকরা বলছেন, প্রেসক্রিপশন ছাড়া, নিজের ইচ্ছেমতো,আইবুপ্রোফেন এবং অ্যাসিটামিনোফেনের মতো ব্যথা উপশমকারী ওষুধ খেলে নিশ্চয়ই ব্যথা কমে। তবে এই ধরনের পেন-কিলার হাই ডোজে নিলে বা ইন্ট্রাভেনাস নিলে , তা লিভার, কিডনির উপর চাপ দেয়। গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সিস্টেমের উপরই প্রভাব ফেলে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে , এটি মস্তিষ্কের রাসায়নিকগুলির উপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে। এর ফল এমন হতে পারে , ওই ওষুধ ছাড়া ব্যথা সারছেই না। অথবা সেই ওষুধ আর কাজই করছে না। হয়ত ব্যথা সারাতে ওই ওষুধেরই বাড়তি ডোজ নিতে হচ্ছে। এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে সার্বিক স্বাস্থ্যে। যেমন, হ্যামারেজ হতে পারে। হৃদরোগ বা শ্বাসকষ্টের মতো গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
লিভারের সিরোসিসও হতে পারে?
চিকিৎসকদের কারও কারও মতে, অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যাসিটামিনোফেন খেলে লিভারে বিপজ্জনক প্রভাব পড়ে। এর ফলে হেপাটাইটিস, ফাইব্রোসিস এমনকি লিভারের সিরোসিসও হতে পারে। লক্ষণগুলি দেরিতে দেখা দিতে পারে হয়ত। তাই যারা এই ওষুধটি ব্যবহার করেন তাদের ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করতেই হবে। এছাড়া আইবুপ্রোফেনের মতো পেন কিলার ওষুধ কিডনিতে রক্ত প্রবাহ হ্রাস করতে পারে। কিডনির কার্যকারিতা হ্রাস পায়। কিডনি ভালভাবে রক্ত পরিশুদ্ধ করতে পারে না। ফলে বর্জ্য অপসারণে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। চিকিৎসকদের কারও কারও মতে, NSAID-এর দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহার গ্যাস্ট্রাইটিস, আলসার এবং পাকস্থলীতে হ্যামারেজ পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
ডিসক্লেমার: লেখায় উল্লেখিত দাবি বা পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। এটি মেনে চলার আগে অবশ্যই সরাসরি বিশেষজ্ঞ/চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।