কলকাতা : নিউমোনিয়া (Pneumonia)। সম্প্রতি অ্যাডিনো-আতঙ্কের ( Adenovirus Panic )  মধ্যে মারাত্মক হারে বেড়ে গিয়েছে শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া। নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুও ঘটছে বহু। প্রতি বছরই নিউমোনিয়ায় বহু শিশু আক্রান্ত হয়। তবে অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ এর পরিণতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জয়দেব রায় ( Dr. Jaydeb Ray

  )। 


কেন হয় নিউমোনিয়া


নিউমোনিয়া হল ফুসফুসের সংক্রমণ। ডা. রায় জানালেন, ফুসফুস একটি বেলুনের মতো জিনিস। যা ফুলে ওঠে ও চুপসে যায়। শ্বাস নেওয়া ও বেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে ফুসফুসের এই প্রসারণ ও সংকোচন হয়। কিন্তু কোনও কারণে ফুসফুস শক্ত হয়ে গেলেই নানারকম সমস্যা হয়ে যায়। নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়। এই রোগে ফুসফুসে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। অনেক ক্ষে‌ত্রে জলও জমতে পারে।


নিউমোনিয়া ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া উভয় প্রকারের সংক্রমণেই হতে পারে। বর্তমানে অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণের ফলে নিউমোনিয়ার প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। ডা. রায় জানালেন, এই সময় যাঁদেরই নিউমোনিয়ায় মৃত্যু ঘটছে, তার কারণ যে অ্যাডিনো ভাইরাস এমনটা কিন্তু নয়। অনেকেরই ব্যাকটেরিয়া থেকে ইনফেকশন ঘটছে। ফাঙ্গাল ইনফেকশনও ঘটতে পারে, তবে তা কম ।



তবে নিউমোনিয়ায় উপসর্গগুলি মোটের উপর একই রকম। 


- বাচ্চার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট। জোরে জোরে শ্বাস নেওয়া। 
- ইনফেকশনের কারণে জ্বর হতে পারে। 
- ভাইরাল নিউমোনিয়া হলে কাশি, হাঁচি, শরীরে ব্যথাও হতে পারে। 
- অ্যাডিনোভাইরাসের কারণে নিউমোনিয়া হলেও জ্বর খুব বেশি হচ্ছে। এতটাই উচ্চ তাপমাত্রা হচ্ছে যে, প্যারাসিটামল দিয়ে জ্বর নিয়ন্ত্রণে রাখা মুশকিল হতে পারে। 
-অ্যাডিনো ভাইরাসের কারণে নিউমোনিয়া হলে চোখে কঞ্জাকটিভাইটিস হতে পারে।
ভাইরাল নিউমোনিয়া ও ব্যাকটেরিয়াল নিউমোনিয়ার ফারাক 



- ভাইরাল ইনফেকশনে প্রথম থেকেই জ্বর বাড়তে শুরু করে, পরে ধীরে ধীরে কমে। কিন্তু ইনফেকশনের কারণ ব্যাকটেরিয়া হলে, প্রথমে জ্বর থাকে না, পরে জ্বর বাড়ে। 
- রুটিন ব্লাড টেস্টেই ধরা পড়ে নিউমোনিয়া ব্যাকটেরিয়াল না ভাইরাল। তবে অ্যাডিনোভাইরাস ঘটিত নিউমোনিয়ায় ব্লাড টেস্টের ফল অনেক সময় ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের মতোও আসছে । এক্স রে করে ফল বুঝতে হচ্ছে । 
- ভাইরাল নিউমোনিয়ায় একদিকের ফুসফুসই আক্রান্ত হয়, ব্যাকটেরিয়াল নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে আক্রান্ত হচ্ছে দুই ফুসফুসই।
- Adenovirus এর কারণে হওয়া নিউমোনিয়ায় ফুসফুস খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষত দেখা গিয়েছে ভাইরাসের সেরোটাইপ সেভেন খুবই ভয়ানক। আবার একই সঙ্গে যদি দুইরকম সেরোটাইপের অস্তিত্ব থাকে, তাহলে তা বেশি ক্ষতিকারক।