Heart Attack Symptoms: একটামাত্র রক্ত পরীক্ষা, খরচ প্রায় ৫০০ টাকার মত, আর তাতেই আগে থেকে আন্দাজ করা যাবে হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের সম্ভাবনা রয়েছে কিনা। আর এই রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই হাজার হাজার মানুষকে হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের সমস্যা থেকে আগাম সতর্কতা পাওয়া যাবে। আন্তর্জাতিক স্তরের একটি গবেষণায় জানা (Heart Attack Precaution) গিয়েছে এই রক্ত পরীক্ষা বিষয়ে। জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজি-তে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্র থেকে জানা গিয়েছে শরীরে রক্তের মধ্যে ট্রোপোনিন নামের এক প্রোটিনের মাত্রা পরিমাপ করে দেখলেই যে কোনও কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার আগাম আন্দাজ পাওয়া যায়।


লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের গবেষকদের দ্বারা এই সমীক্ষা করা হয়েছিল এবং ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন এই গবেষণায় অর্থসাহায্য করেছে। এই গবেষণায় (Heart Attack Precaution) বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়েছে ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ৬২ হাজার মানুষের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য। বিগত ১০ বছর ধরে গবেষকরা এই ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যাবতীয় কিছু পরীক্ষা করে দেখেছেন। বয়স, কোলেস্টেরলের মাত্রা, রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপানের অভ্যাসের সঙ্গে রক্তে ট্রোপোনিনের মাত্রাও পরিমাপ করে দেখা হয়েছে এই সমীক্ষায়।


ট্রোপোনিন আসলে কী


হার্টের পেশিকোশে পাওয়া যায় এই প্রোটিন ট্রোপোনিন। হার্টের কোশ-কলা নষ্ট হয়ে গেলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ট্রোপোনিন হার্টের কোশ থেকে রক্তবাহে এসে মিশতে শুরু করে, হার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা তা জানতে এখনো হাসপাতালে ট্রোপোনিন টেস্ট করা হয়, তবে এই গবেষণা একটি সতর্কতামূলক ক্ষেত্রে বড় বদল আনতে চলেছে। কোলেস্টেরল টেস্টের মত এই ট্রোপোনিন টেস্টও সময়ে সময়ে করতে পারলে আগাম সতর্ক হওয়া সম্ভব, জানাচ্ছেন গবেষকরা। এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত অধ্যাপক অনুপ শাহ জানিয়েছেন যে ট্রোপোনিন স্বাভাবিক মাত্রার মধ্যে থাকলেও তা ইঙ্গিত দেয় নীরবে হার্টের পেশি নষ্ট হচ্ছে কিনা।


ঝুঁকি নির্ণয় আরও সহজ হবে


দেখা গিয়েছে মধ্যম মানের ঝুঁকি রয়েছে এমন মানুষদের ক্ষেত্রে এই ট্রোপোনিন টেস্ট করার পরে তাদের মধ্যে ৮ শতাংশ মানুষকে বেশি মাত্রার ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের তালিকাভুক্ত করতে হয়েছে। ফলে এই পরীক্ষার মাধ্যমে প্রতি ৫০০ জন মানুষের মধ্যে একজনকেও হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের হাত থেকে বাঁচানো যাবে। আগাম সতর্কতা নেওয়া যাবে।


ভারতে এটি কেন জরুরি


ভারতে ক্রমেই হৃদরোগের মাত্রা বেড়ে চলেছে মানুষের মধ্যে। দেশে সবথেকে বেশি মৃত্যু হয় হার্ট অ্যাটাকের কারণে। বিভিন্ন সমীক্ষার মাধ্যমে পাওয়া তথ্য অনুসারে দেখা গিয়েছে-


ক) ভারতে প্রতি ৩৩ সেকেন্ডে হার্ট অ্যাটাকে একজন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। ৫০-এর কম বয়সীদের মধ্যে এই মৃত্যুহার বাড়ছে।


খ) ভারতে সমস্ত মৃত্যুর ঘটনার ২৮ শতাংশই হচ্ছে কার্ডিওভাসকুলার রোগের কারণে। উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল এর অন্যতম কারণ।


গ) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে ভারতের ২৫ শতাংশ মানুষের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি।


তথ্যসূত্র: জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজি