গরম। সেই সঙ্গে প্যাচপ্যাচে আবহাওয়া। মশার উৎপাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে একাধিক মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব। আবারও সকলকে ভয় ধরিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস (West Nile virus case)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি স্টেটে বাড়ছে এই ভাইরাসের দাপট। অন্যবারের থেকে একটু বেশিই দ্রুত ছড়াচ্ছে এই রোগ, আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন সে-দেশের জনস্বাস্থ্য আধিকারিকরা।
ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসের সংক্রমণের বৃদ্ধিতে ফের আতঙ্ক ছড়িয়েছে মানুষের মনে। কারণ, এই রোগে শুধু যে জ্বর,গায়ে ব্যথা , বমির মতো উপসর্গ দেখা যায়, তাই নয়। এই অসুখে আক্রান্ত হতে পারে স্নায়ুতন্ত্র। ভাইরাস থাবা বসাতে পারে মস্তিষ্কেও। আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলে তো কথাই নেই।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, এবার মার্কিন মুলুকে জনস্বাস্থ্য আধিকারিকরা বিশেষ চিন্তিত। স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে ভাইরাসের দাপট । সিডিসি জুন মাসে প্রথম ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসের আক্রান্তকে চিহ্নিত করে। এর মধ্যে দক্ষিণ ইলিনয়ের এক রোগী গুরুতর জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ১৬ জুলাই লেক কাউন্টিতে দ্বিতীয় একটি কেস ধরা পড়ে। আক্রান্ত হয়েছিলেন ৭০ বছর বয়সী এক রোগী।
কিন্তু অনেকেই হয়ত জানেন না ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস অন্য অনেক মশাবাহিত রোগের থেকে বিপজ্জনক হতে পারে। সংক্রামিত মশা কামড়ালে আর রক্ষে নেই। পাখি বা বাড়ির পোষ্য, আক্রান্ত হতে পারে যে-কেউ। মানুষের মধ্যেই এই ভাইরাস ছড়ায় মশার কামড়ের মাধ্যমেই। আর রোগের সবথেকে খারাপ ফল হল নার্ভাস সিস্টেমকে আক্রমণ করা ।
সবথেকে চিন্তার বিষয় হল, WNV-তে আক্রান্ত ১০ জনের মধ্যে ৮ জনই প্রথম প্রথম টের পায়নি কিছু হয়েছে বলে। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে দাবি, অনেক সময় মশার কামড়ের ২ থেকে ১৪ দিন পরে প্রথম লক্ষণগুলি দেখা যেতে শুরু করে। জ্বর, কাশি, মাথাব্যথা ক্লান্ত লাগার মতো সাধারণ কিছু লক্ষণ দেখা যেতে পারে। সেই সঙ্গে শরীরের ব্যথা হতে পারে। তার সঙ্গে কারও ত্বকে ব়্যাশ, ফুসকুড়ি দেখা যেতে পারে। এগুলো হলে উপসর্গ ভিত্তিক চিকিৎসায় সহজে সেরে ওঠা যায়, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এই ভাইরাস ভয়াল রূপ নেই। মস্তিষ্ক বা মেরুদণ্ডে থাবা বসায়। তখন বেশি জ্বর, তীব্র মাথাব্যথা , ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া থেকে ভুল বকা, খিঁচুনির মতো সমস্যা আসে। পেশী দুর্বল হয়ে পড়ে। মানুষ মৃত্যুর কোলেও ঢলে পড়ে।
একবার ভারতেও এই ভাইরাসের আক্রমণ ধরা পড়ে। কেরলের এক ব্যক্তি মারাও যান। তবে সৌভাগ্যের বিষয় এটাই, এখনও এদেশে এই ভাইরাসের হানা তেমন ভাবে দেখা যায়নি।