নয়াদিল্লি : ২ মে বিশ্ব হাঁপানি দিবস ( World Asthma Day )। অ্যাজ়মার মতো কষ্টকর অসুখে যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের সতর্ক করার জন্যই বিশেষ এই দিন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রবল গ্রীষ্মে বাড়তে পারে অ্যাজ়মা।
বিশ্ব হাঁপানি দিবস মে মাসের প্রথম মঙ্গলবার পালন করা হয়। এই দিনটি পালনের লক্ষ্য হল, হাঁপানি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। অ্যাজ়মা একটি দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসযন্ত্রের রোগ । বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষ এতে ভুগছেন। বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৩৩৯ মিলিয়ন মানুষ হাঁপানিতে আক্রান্ত হন। ২০২৫ সালের মধ্যে সংখ্যাটি ৪০০ মিলিয়নে পৌঁছতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (রেসপিরেটরি অ্যান্ড ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন ) ডা. নিখিল মোদি, সংবাদ সংস্থা আইএএনএসকে জানিয়েছেন, "অ্যাজ়মা আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য তাপপ্রবাহ একটি ঝুঁকির সময় হতে পারে। কারণ প্রচণ্ড তাপ লক্ষণগুলিকে আরও খারাপ করে দিতে পারে । হাঁপানির কষ্ট বাড়ে এই সময়ে। '
তিনি আরও বলেন, "উচ্চ তাপমাত্রা এবং বর্ধিত আর্দ্রতার দরুণ শ্বাসনালীতে সমস্যা হয়, যার ফলে শ্বাস নিতে অসুবিধা হতে পারে। এর ফলে শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং বুকে চাপ ধরার মতো সমস্যা হতে পারে,"।
এছাড়া এ সময় বায়ু দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে হাঁপানির লক্ষণগুলি বাড়ে। ২০২২ সালে, ভারত ১২২ বছরের মধ্যে তার উষ্ণতম এপ্রিল ও মার্চ দেখেছে। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় এই তথ্য সামনে এসেছে। এবছরও ধারা অব্যাহত। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ ( IMD ), গত সপ্তাহে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, দেশে মে মাসের শেষ পর্যন্ত গড় তাপমাত্রা অত্যন্ত বেশি থাকবে। সারা দেশের বহু রাজ্যেই চলবে তাপপ্রবাহ। বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, পূর্ব উত্তর প্রদেশ, উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, তেলঙ্গানা এবং উপকূলীয় গুজরাতে তাপপ্রবাহের মাত্রা "স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি" হবে।
গরম থেকে বাঁচতে
হাঁপানি রোগীদের ক্ষেত্রে এই তাপপ্রবাহ খুব ক্ষতিকর। অসুখের প্রবণতা আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই বিশেষজ্ঞরা হাঁপানি-আক্রান্তদের সকাল ১১টার পর বাড়ির ভিতরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। বিকাল ৩টা পর্যন্ত খুব প্রয়োজন না পড়লে বাড়ির বাইরে না বেরনোই ভাল।
এই পরিস্থিতিতে সুরক্ষিত থাকার জন্য, হাঁপানিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চরম তাপ এবং আর্দ্রতার সংস্পর্শ এড়াতে হবে। খেতে হবে প্রচুর পানীয়। সঙ্গে রাখতে হবে ইনহেলার । যাঁরা হাঁপানির সমস্যায় বেশি ভোগেন, তাঁদের হাতের কাছেই রাখত হবে ওষুধপত্তর। প্রয়োজনে নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ। বলছেন, ডা. অম্বরীশ যোশী ( সিনিয়র কনসালট্যান্ট, পালমোনারি অ্যান্ড স্লিপ মেডিসিন, প্রাইমাস সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল )।
বাইরে থাকাকালীন, হাঁপানিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দূষণ এড়িয়ে চলতে হবে যথাসম্ভব। উষ্ণ, আর্দ্র বাতাসের সংস্পর্শ এড়াতে পারলে ভাল। প্রয়োজনে স্কার্ফে ঢাকুব মুখ এবং নাক। ক্যাফেইনযুক্ত এবং অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলতেই হবে।