কলকাতা : উচ্চ রক্তচাপ Hypertension or high blood pressure যে শুধুমাত্র হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় ,তাই নয়,   রক্তবাহিকাগুলিরও ক্ষতি করে। এর ফলে চোখের মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। এর প্রভাবে সাবকঞ্জাক্টিভাল রক্তক্ষরণের ( subconjunctival haemorrhage) মতো সমস্যা থেকে শুরু করে রেটিনার শিরাগুলি আটকে দিয়ে দৃষ্টি শক্তি বিঘ্নিত করতে পারে। এর ফলে দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন মানুষ। হাইপারটেনশন থেকে চোখের কী কী সমস্যা হতে পারে তা জানাচ্ছেন চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ সোহম বসাক ( Consultant, Cornea Department, Disha Eye Hospitals )। 



  • হাইপারটেনসিভ রেটিনোপ্যাথি (Hypertensive retinopathy ) - দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ রেটিনায় রক্ত পরিবহনকারী রক্তবাহিকাগুলির ক্ষতি করতে পারে। সমস্যা তৈরি করতে পারে চোখের পিছনের স্পর্শকাতর পর্দায়।  পরিবর্তন ঘটাতে পারে। vessel damage  হলে ফ্লুইড বেরিয়ে আসে। তার ফলে  রেটিনাল টিস্যুগুলির ক্ষতি হয়। কখনও কখনও অল্প অল্প করে রক্তক্ষরণের কারণ হতে পারে। এর ফলে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যেতে পারে।


  • রেটিনার শিরা এবং ধমনীর পথ রুদ্ধ হওয়া (Retinal vein and artery occlusion) - এই সমস্যাকে সাধারণত রেটিনার স্ট্রোক বলা হয়ে থাকে।


  •  ইস্কেমিক অপটিক নিউরোপ্যাথি ( Ischemic optic neuropathy )- মস্তিষ্কের সঙ্গে চোখের সংযোগকারী স্নায়ু এই অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়। উচ্চ রক্তচাপের ফলে এই স্নায়ুগুলিতে রক্ত ​​​​প্রবাহ হ্রাস হতে পারে, যার ফলে দৃষ্টিহানি হতে পারে।


  • Hypertension বা উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে যাঁরা ডায়াবেটিক, তাঁদের diabetic eye disease হতে পারে। 


  •  সাবকনজাংটিভাল হেমারেজ (Subconjunctival haemorrhage) - রক্তচাপের আকস্মিক পরিবর্তনের ফলে চোখের সাদা অংশের সূক্ষ্ম ধমনী ফেটে যেতে পারে এবং আশেপাশের অংশে রক্ত ​​বেরোতে পারে। এটি চোখের টকটকে লালভাব সৃষ্টি করতে পারে যা খুবই উদ্বেগজনক। তবে এই  সমস্যা তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিকারক এবং নিজে থেকেই সারে । সামান্য ওষুধ বা কোন চিকিৎসা ছাড়াই ২ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে লালভাব দূর হয়।


  •  উচ্চ রক্তচাপ গ্লুকোমার ডেকে আনে দ্রুত। বার্ধক্যে গ্লুকোমা ও চোখের রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় হাইপারটেনশন ( risk factor in progression of glaucoma and age-related macular degeneration ) । 


উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাটি এখন আর শুধু বয়স্কদের অসুখ নয়। বর্তমান ট্রেন্ড কিন্তু ভয়ংকর দিকে গড়াচ্ছে। ২০ পেরনো ছেলে-মেয়েরাও আক্রান্ত হচ্ছেন অহরহ।  এমনটা নয় কিন্তু। প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকা চাপ, স্ট্রেস মধ্য কুড়ি থেকেই ডেকে আনছে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা। চিকিত্সকরা বলছেন, যাঁদের পরিবারে হাই ব্লাড প্রেসারের ইতিহাস আছে, তাঁদের ২০ পেরলেই বিপি মনিটর করা শুরু করতে হবে। হু-এর নির্দেশিকা অনুসারে, ব্লাড প্রেসার যদি ১৪০/৯০ এর বেশি হয়, তবে তো ওষুধ চালু করতেই হবে। কিন্তু লাইফস্টাইল মডিফিকেশন শুরু করতে হবে সময় থাকতেই। দরকারে ২০ পেরলেই।  আজকাল মাঝ ২০ বয়সের হাইপারটেনশনের রোগী সংখ্যায় প্রচুর। অবহেলায় ঘটে যেতে পারে বড় বিপদ। ঘটে যাচ্ছে হার্ট অ্যাটাক বা সাডেন কার্ডয়াক ডেথ-এর মতো ঘটনাও। সেই সঙ্গে হতে পারে চোখের অসুখ। 


 



চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ সোহম বসাক