LIVE UPDATES: শুধু ছাত্র বলেই কেউ আইন হাতে তুলে নিতে পারে না, জামিয়ার ঘটনায় বললেন প্রধান বিচারপতি
ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে এসে বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে ও পাথর ছোঁড়া হয়েছে অভিযোগ ওঠায় গতকাল জামিয়ায় অভিযান চালায় পুলিশ।
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Last Updated:
16 Dec 2019 01:57 PM
এদিকে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চিফ প্রোক্টর ওয়াসিম আহমেদ খানের অভিযোগ, জোর করে পুলিশ তাঁদের ক্যাম্পাসে ঢুকে স্টাফ মেম্বার, পড়ুয়াদের মারধর করেছে। পাল্টা চারটি বাস, অন্য যানবাহনে অগ্নিসংযোগের পরই তারা কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়, লাঠি চালায় বলে দাবি পুলিশের।
গতকাল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখানোর সময় দক্ষিণ দিল্লিতে জামিয়া মিলিয়ার কাছে নিউ ফ্রেন্ডস কলোনিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় স্থানীয়দের। চারটি সরকারি বাসে আগুন লাগানো হয়, দুটি পুলিশের গাড়িও আগুনে পোড়ে। ৬ জন পুলিশকর্মী ও ২ জন দমকলকর্মী জখম হন।
জামিয়ার পড়ুয়াদের বিক্ষোভ, প্রতিবাদের সময়ই ঝামেলার সূত্রপাত। যদিও পড়ুয়াদের সংগঠনের দাবি, হিংসা, অশান্তি, লুঠপাটের কোনও যোগ নেই। ‘কিছু শক্তি’ প্রতিবাদের সময় ঢুকে পড়ে ‘ঝামেলা পাকিয়েছে’। জামিয়ার ধৃত পড়ুয়াদের পরে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
দিল্লি হাইকোর্টেও পিটিশন জমা পড়েছে রবিবার রাতে জামিয়ার পড়ুয়াদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগে প্রতিকার চেয়ে। দ্রুত শুনানির আবেদন করা হলেও প্রধান বিচারপতি ডি এন পটেল ও বিচারপতি সি হরি শঙ্করের বেঞ্চ তা খারিজ করে বলে, বিষয়টি খুব জরুরি নয়।
আরেক শীর্ষ আইনজীবী কলিন গনজালভেস কোনও অবসরপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিকে দিয়ে পুলিশি আচরণের তদন্ত দাবি করলে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা ভিডিও দেখতে চাই না (যখন এক আইনজীবী ঘটনার ভিডিও আছে বলে জানালে এই প্রতিক্রিয়া তাঁর)। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, নষ্ট হওয়া চলতে থাকলে আমরা পিটিশন শুনব না। আগামীকাল মঙ্গলবার বিষয়টির শুনানি হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে এই পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে বলেছেন, স্রেফ পড়ুয়া বলেই তার অর্থ এই নয় যে, তারা আইনশৃঙ্খলা হাতে তুলে নেবে। আগে পরিস্থিতি শান্ত হোক, তারপর বিষয়টি ভেবে দেখা যাবে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো সঠিক মনের অবস্থায় আমরা নেই। আগে হিংসা-হাঙ্গামা থামুক। প্রধান বিচারপতি আরও বলেছেন, আমরা অবশ্যই কী কী অধিকার, সেসব নির্ধারণ করব। কিন্তু আগে এসব বন্ধ করতে হবে, তারপরই আমরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিবেচনা করব। আমরা অধিকার, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, বিক্ষোভের বিরুদ্ধে নই।
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের ওপর পুলিশি হিংসা, অত্যাচারের অভিযোগ তুলে বিরুদ্ধে যে পিটিশন দায়ের হয়েছে, সে ব্যাপারে কঠোর মনোভাব দেখিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, আগে ‘এসব বন্ধ হোক’, একমাত্র তখনই পিটিশনের শুনানি হতে পারে। অর্থাত্ সরকারি সম্পত্তির ওপর হামলা থামলেই তারা শুনানি করবে। জামিয়া ও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিংসাত্মক ঘটনাবলী স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিবেচনা করে পদক্ষেপ করতে শীর্ষ আদালতে আবেদন করেছেন আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ। তিনি পিটিশনে বলেছেন, যা ঘটেছে, তা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন।
জামিয়া পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপের ওপর দ্রুত শুনানির আবেদন খারিজ করল দিল্লি হাইকোর্ট।
দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগে ট্যুইটে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে আক্রমণ প্রিয়ঙ্কার। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক লিখেছেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ঢুকে পড়ুয়াদের মারা হচ্ছে। যখন সরকারের সাধারণ মানুষের কথা শোনা দরকার, তখন উত্তর-পূর্ব ভারত, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লিতে দমন-পীড়ন নীতি চালানো হচ্ছে। পড়ুয়া ও সাংবাদিকদের উপর জোর করে মতামত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্ট চলছে। এর মাধ্যমে সরকার কাপুরুষোচিত মনোভাবের পরিচয় দিচ্ছে।
আজ সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত গুয়াহাটিতে শিথিল কারফিউ।
হিংসার আশঙ্কায় বন্ধ রাখা হল দক্ষিণ দিল্লির সব স্কুল। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলে যাচ্ছেন পড়ুয়ারা।
প্রেক্ষাপট
নয়াদিল্লি: দিল্লি পুলিশের সদর দফতরের বাইরে ৬ ঘণ্টার ধর্নার পর উঠে গেলেন জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকশো ছাত্রছাত্রী। গতকাল জামিয়ায় পুলিশ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ধর্নায় বসেন তাঁরা। দাবি করেন, আটক হওয়া ৫০ জন ছাত্রছাত্রীকে ছেড়ে দিতে হবে। পুলিশ জানিয়েছে, আজ ভোরেই ওই পড়ুয়াদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে এসে বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে ও পাথর ছোঁড়া হয়েছে অভিযোগ ওঠায় গতকাল জামিয়ায় অভিযান চালায় পুলিশ। লাঠিচার্জে বেশ কয়েকজন পড়ুয়া আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। পুলিশ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপরেও পাথর ছুঁড়েছে, তাদের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন এতে, এঁদের মধ্যে রয়েছেন সাউথ ইস্ট ডিস্ট্রিক্টের ডিসিপি, অতিরিক্ত ডিসিপি (দক্ষিণ), পুলিশের ২ জন এসিপি, ৫ জন এসএইচও প্রমুখ।