অমিত ভাটিয়া, মুম্বই: একটা ছবির সঙ্গে যদি অজয় দেবগণ (Anay Devgan), তব্বু (Tabu), নীরজ পাণ্ডে (Neeraj Pandya), এম এম কিবারাণী (MM Keeravaani) -র মতো বড় নাম যুক্ত থাকে, তাহলে অবশ্যই দর্শক সেই সিনেমা থেকে একটা নতুন গল্প, নতুন ধারা প্রত্যাশা করবেন। সেটা তাঁরা করতেই পারেন। কিন্তু নতুন ছবি 'অউরো মে কাঁহা দম থা' ( ‘Auron Mein Kahan Dum Tha’ ) ছবিটি নতুনত্ব তো কিছু দিল না বটেই, বরং তব্বু আর অজয় দেবগণের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছাড়া ছবিটায় উল্লেখযোগ্য আর কোনও আকর্ষণ নেই বললেই চলে।
মূল গল্প
এই গল্পে দেখানো হচ্ছে, দুটি খুনের মামলায়, ২৩ বছর পরে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে কৃষ্ণ। এই চরিত্রেই দেখা যাবে অজয় দেবগণ-কে। জেলের বাইরে, ২৩ বছর ধরে অজয় দেবগণের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন তব্বু। এখানে তাঁর নাম বসুধা। বর্তমানে বিবাহিত হয়েও কেন বসুধা তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকের অপেক্ষায় রয়েছেন, সেখানেই এই গল্পের মোচড়। কিন্তু কেন অজয় দেবগণ এই দুটো খুন করেছিলেন, সেই গল্পই বলা হবে গোটা সিনেমা জুড়ে। কিন্তু সিনেমার শেষে, একেবারে সবটা জানবার পরে মনে হবে, গল্প আরও জমাটি হতেই পারত।
কেমন হল 'অউরো মে কাঁহা দম থা'
শুরুর দিক থেকেই ছবিটা বেশ ধীর গতিতে এগিয়েছে। সাসপেন্স তৈরি করার জন্য সময় নিয়েছে অনেকটা। এই সাসপেন্স তৈরি করাটা অবশ্য সার্থক বললে অত্যুক্তি হবে না। নীরজ পাণ্ডে যে জানিয়েছিলেন এটি একটি রোম্যান্টিক থ্রিলার, সেই টাইটেলের সদব্যবহারই করেছে এই সিনেমা। তবে গল্পের একেবারে শেষে গিয়ে, সাসপেন্স খুলে গেলে হতাশ হতে পারেন দর্শক। ফাইনালে আরও একটু ট্যুইস্ট থাকলে দর্শকেরা বোধহয় তুষ্ট হতেন। বলা যায়, গল্পের শেষে গিয়ে দর্শকদের সঙ্গে অবিচারই হয়েছে। নীরজ পাণ্ডের ঝুলিতে যেহেতু এর থেকে অনেক ভাল ছবি রয়েছে, তাই দর্শকেরা এই সিনেমার থেকে অনেক বেশি প্রত্যাশা করেছিলেন। ৯০-এর দশকের ধারার এই ছবিতে আরও চমক দেওয়ার জায়গা ছিল। অজয় দেবগণ আর তব্বুর-ও এর থেকে অনেক ভাল কাজ রয়েছে।
অভিনয়
অজয় দেবগণের চরিত্রকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে ছবির গল্প। অভিনয় ছাড়াও, চোখের মধ্যে একটা রহস্য তৈরি করার চেষ্টা করেছেন অজয়। একটা পর্যায় পর্যন্ত তিনি সফলও হয়েছেন। তবে অজয় দেবগণের তুখোড় অভিনয়ও দুর্বল চিত্রনাট্যকে ঢাকতে পারেনি। একই ঘটনা ঘটেছে তব্বু-এর ক্ষেত্রেও। তাঁর তুখোড় অভিনয়ও ছবিটিকে বাঁচাতে পারেনি। নিজের কেরিয়ারের অন্যতম সেরা অভিনয়টি এই ছবিতে করেছেন তব্বু। তবে দুর্বল চিত্রনাট্য বাঁচাতে পারল না ছবিটাকে। জিমি শেরগিলের মতো অভিনেতাকেও সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেননি পরিচালক। শান্তনু মাহেশ্বরী আর সাই এম মান্জরেকর-এর পারফরম্যান্সও বেশ ভাল।
পরিচালনা
'স্পেশাল ২৬', 'আ ওয়েডনেস ডে', 'বেবি'-র মতো ছবি এর আগেই পরিচালনা করে নিজের একটা জায়গা দর্শকদের মনে তৈরি করে ফেলেছেন নীরজ পাণ্ড। তবে এই ছবিটিতে সেই উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া চলে না। এই সিনেমার মধ্যে যে ট্যুইস্টটাই ছবির শিরদাঁড়া, সেটাই দর্শকদের অবাক করতে ব্যর্থ হবে। দুর্বল চিত্রনাট্যের ফলে অজয় দেবগণ, তব্বুর মতো দুর্দান্ত অভিনেত্রীদেরও সঠিক ব্যবহার করা গেল না।
মিউজিক
সঙ্গীত পরিচালক এম এম কিবারাণী (MM Keeravaani) অবশ্য নিজের কাজটি বেশ সুচারুভাবেই সম্পন্ন করেছেন। ধীর গতির এই সিনেমার গানগুলো কিন্তু বেশ উপভোগ্য। গানের লিরিক্স-ও মানানসই। যদি আপনি অজয় দেবগণের ভক্ত হন, তাহলে অন্তত একবার এই ছবিটা দেখে ফেলতেই পারেন। নাহলে এই ছবিটা দেখার আগে অন্তত একবার ভাবতে হবেই।
আরও পড়ুন: Big Boss OTT: আজই ফাইনাল, 'বিগ বস' বিজেতা 'প্রাইজ মানি' হিসেবে পেতে পারেন কত টাকা?
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।