অমিত ভাটিয়া, মুম্বই: রণবীর সিংহের (Ranbir Singh) অভিনয়ের ওপর ভরসা করেছিলেন অনেকেই। রোহিত শেট্টি (Rohit Shetty) পরিচালিত 'সার্কাস' যে কমেডি ঘরানার ছবি হবে, সেই ইঙ্গিত ছিল আগে থেকেই। ট্রেলারেও মিলেছিল সেই ঝলক। কিন্তু যে রোহিত শেট্টি গোলমাল সিরিজের জন্য জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন, 'সার্কাস' পরিচালনার সময় কোথায় তাঁর সেই কমেডি গল্প বলার চেনা ছন্দ? 'গোলমাল' ছবির মতো 'ফিল্মি মশালা' তো এই ছবিতে নেই বটেই, বরং বলা যায়, এটি রোহিত শেট্টি পরিচালিত এটি দুর্বলতম ছবি।
এই ছবির গল্প চার যমজ ছেলেকে নিয়ে এই ছবির গল্প। অনাথ আশ্রমে বেড়ে ওঠা এই দুই যমজ ভাইকে দত্তক নেন এক চিকিৎসক। এই দুই ভাইকে দুটি ভিন্ন পরিবারে দত্তক নেওয়ার ব্যবস্থা করেন ডাঃ রায়। দুই ভিন্ন পরিবারে বড় হতে থাকে দুই ভাইয়েরা। দুজনেই বসবাস করে দুটি শহরে। গল্প দানা বাঁধে যখন এক শহরের দুই ভাই অন্য শহরে ঘুরতে আসে। সেই শহরেই 'সার্কাস'-এর ব্যবসা করে অন্য দুই ভাই।
এই ছবির গল্পে বিভ্রান্তি তো রয়েছেই। সেইসঙ্গে ছবির সংলাপ খুবই দুর্বল। ছবিটি দেখার পরে, আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, কেন রোহিত শেট্টি এই ছবিটি তৈরি করেছেন বা আদৌ কী রোহিত শেট্টিই বানিয়েছেন এই ছবি!
রণবীর সিংহের থেকে এই ছবিতে যথেষ্ট প্রত্যাশা ছিল দর্শকদের। কিন্তু তাঁর অভিনয়ের প্রতিভাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেননি রোহিত শেট্টি। যে রণবীরের উপস্থিতিই দর্শকদের বিনোদন দেওয়ার জন্য যথেষ্ট, সেই রণবীরকে এই ছবিতে খুঁজে পাবেন না দর্শক। বরুণ শর্মা 'ফুকরে' ছবিতেই প্রমাণ করে দিয়েছিলেন তিনি একজন যথেষ্ট ভাল অভিনেতা। কিন্তু 'সার্কাস'- এ তাঁকে চেনা ছন্দে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পূজা হেগড়ের অভিনয় মোটামুটি। জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজকে বাকি সব ছবিতে যেভাবে পাওয়া যায় সেভাবেই তিনি ধরা দিয়েছেন। আলাদা করে তাঁর অভিনয় নিয়ে কিছু বলার নেই।
সঞ্জয় মিত্রর কমেডি টাইমিং আমাদের সামান্য হলেও কমিক রিলিফ দেয়। সিদ্ধার্থ যাদব এই ছবিতে ভাল অভিনয় করেছেন। কিন্তু জনি লিভারের মতো অভিনেতা এই ছবিতে থাকলেও তাঁদের ভালভাবে ব্যবহার করতে পারেননি রোহিত।
রোহিত শেট্টি পরিচালিত সবচেয়ে দুর্বল ছবি এটি। পরিচালনায় রোহিত তাঁর দক্ষতার পরিচয় দিতে পারেননি মোটেই। এই ছবিতে ৬০ ও ৭০-এর দশকের সময়কালকে তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু বেঙ্গালুরু শহরের যে অংশকে দেখানো হয়েছে সেখানে কোথাও এই সময়ের জিনিসের চিহ্নমাত্র নেই। সময়কাল ঘোষণা করা হলেও সঠিকভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়নি ছবিতে। সেটগুলিকে মোটেি বিশ্বাসযোগ্য নয়। এই ছবিটি দেখতে দর্শকেরা কেন সিনেমাহলের সামনে ভিড় জমিয়েছেন তা সত্যিই বোঝা মুশকিল।
ছবির মিউজিকও যথেষ্ট দুর্বল। গানগুলি একবার শোনার পরে মনে দাগ কাটে না।