নয়াদিল্লি: বর্তমান দিনে প্রেম ভালবাসা সম্পর্কের মানে অনেকটাই বদলে গেছে। 'রিলেশনশিপ'-এর (Relationship) বদলে এখন হাজির হয়েছে 'সিচ্যুয়েশনশিপ' (Situationship)। আগেকার দিনে মন এক দুবার ভাঙত, আজকাল সপ্তাহে এক দুবার মন ভাঙে। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এই ছবি প্রশ্ন তোলে যে রোবট (Robot) কি মানুষের মতো ভালবাসতে পারে? রোবটের ওপর কি বেশি ভরসা করা যায়? 'ভ্যালেন্টাইন্স ডে'র সময়ে মুক্তি পাওয়া এই ছবি ভালবাসার অন্য রং দেখাবে দর্শককে, এবং অবশ্যই মনোরঞ্জন করবে। 


গল্প


'তেরি বাতোঁ মে অ্যায়সা উলঝা জিয়া' ছবিটি আরিয়ান নামে এক রোবটিক ইঞ্জিনিয়ারের যে বিয়ে করতে চায় না কারণ কোনও মেয়েকেই তার পছন্দ হয় না। আরিয়ানের চরিত্রে শাহিদ কপূর (Shahid Kapoor)। কিন্তু সেই ছেলেই এরপর প্রেমে পড়ে সিফরা নামে এক রোবটের, যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন কৃতী শ্যানন (Kriti Sanon)। কিন্তু এক মানুষ কীভাবে একটি রোবটের প্রেমে পড়তে পারে? সিফরাকে নিজের পরিবারের সঙ্গে আলাপ করানোর পর কী হয়? এই রোবটিক ভালবাসা কোন রঙে রাঙিয়ে ওঠে? সেই নিয়েই ছবির গল্প।


কেমন এই ফিল্ম?


ছবির শুরুটা বেশ খারাপ। শুরুর দিকে মনে হতে পারে এসব কী চলছে! এই ফিল্ম বেশ বিরক্তিকর মনে হবে প্রথমে কিন্তু বিরতি পর্যন্ত পৌঁছতে পৌঁছতে আসল বিষয়ে প্রবেশ করে ছবি, যখন রোবট কৃতী শ্যাননের সঙ্গে নিজের পরিবারের আলাপ করিয়ে দেয় শাহিদ কপূর। সেখান থেকেই আসল গল্পের শুরু এবং দ্বিতীয় ভাগে এই ছবি বেশ মনোরঞ্জক। দ্বিতীয় ভাগে পৌঁছেই এই ফিল্ম দেখার যোগ্য মনে হবে। প্রথমার্ধ্বে এই ছবির গল্পের ভিত্তি তৈরি করা হয়েছে কিন্তু তাতে বেশ অনেকটা সময় নিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেই অংশটা অনায়াসে ছোট করা যেত। যখন শাহিদের পরিবারের সঙ্গে কৃতীর আলাপ হয়, সেই দৃশ্য বড়ই মজার। এই ফিল্ম এমন বার্তাও দেয় যে রোবট অনেকাংশে মানুষের থেকে বেশি ভালবাসতে পারে। ক্লাইম্যাক্সে একটি সারপ্রাইজ আছে এবং ছবির শেষটা বেশ আকর্ষণীয় করার চেষ্টা করা হয়েছে।


অভিনয়


শাহিদ কপূরের অভিনয় বেশ ভাল। পর্দায় তাঁর উপস্থিতি আকর্ষণীয় কিন্তু এমন চরিত্র তিনি আগেও করেছেন। অভিনয়ে নতুনত্ব বিশেষ নেই। এই ছবির প্রাণ কৃতী শ্যানন। রোবটের চরিত্রে কৃতী শ্যানন বেশ ভাল। এমন চরিত্র কৃতী শ্যানন আগে করেননি। তাঁর রোবটিক অভিব্যক্তি হাসতে বাধ্য করবে। এই ছবির গল্প একপ্রকার বলতে গেলে কৃতী শ্যাননের আশেপাশেই ঘোরাফেরা করে এবং চরিত্রের প্রতি সুবিচার করেছেন তিনি। পর্দায় ধর্মেন্দ্রকে দেখে ভাল লাগবে কিন্তু তাঁর চরিত্রকে আরও খানিকটা স্থান দিলে ভাল হত। এই বয়সে দাঁড়িয়েও যে তিনি অভিনয় করছেন, তাঁকে ভাল করে ব্যবহার করা উচিত ছিল। ডিম্পল কপাডিয়াকেও বেশ ভাল লাগে পর্দায় এবং তাঁর অভিনয়ও নিঃসন্দেহে ভাল। বাকি শিল্পীরাও বেশ ভাল কাজ করেছেন।


পরিচালনা


পরিচালক হিসেবে অমিত যোশী ও আরাধনা শাহের কাজ ভাল। প্রথম ভাগ আরও ভাল করা উচিত ছিল। ছবির ওপর পরিচালকদ্বয়ের দখল দ্বিতীয় ভাগে গিয়ে বোঝা যায়। ছবির গল্প ও বিষয় দুটোই আকর্ষণীয় কিন্তু সেই হিসেবে ছবির ট্রিটমেন্ট অনেকটা কমজোর বলে মনে হয়। আরও কিছু মজার দৃশ্য থাকলে আরও ভাল লাগত।


আরও পড়ুন: 'Fighter' Review: ঋত্বিক-দীপিকার অনস্ক্রিন রসায়ন আকর্ষণীয়, 'ফাইটার' আবেগঘন ও মনোরঞ্জক


সঙ্গীত


সচিন-জিগরের সঙ্গীত পরিচালনা ঠিকঠাক। টাইটেল সং ছাড়া অন্য কোনও গানই বিশেষ মনে স্থান পায় না। 


সব মিলিয়ে এই ছবি খানিক অন্য ধরনের তৈরির চেষ্টা চলেছে যা খানিকটা হলেও সফল। ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র আবহে এই ছবি মুক্তি পেয়েছে, প্রেমের ছবি দেখে আসতে পারেন।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।