নয়াদিল্লি: 'শ্রীকান্ত' ('Srikanth' Review) ছবির ট্রেলার যখন মুক্তি পেয়েছিল তখন থেকেই প্রশংসায় ভাসছে। প্রত্যেকেই এই ছবির ট্রেলার অত্যন্ত পছন্দ করেছিলেন। সকলেই আশা করেছিলেন যে ছবিও দুর্দান্ত হবে। ঠিক এমনটাই হয়েছে। সফল ছবি '12th ফেল'-এর (12th Fail) পর আরও এক বায়োপিক যা দেখে মন ভাল হয়, যা দেখে মনে জোয়ার উঠবে, যা আপনাকে অনুপ্রেরণা দেবে। ফিল্মের কী কী অত্যন্ত ভাল লেগেছে তা জানতে পড়তে হবে রিভিউ এবং তারপর আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে 'শ্রীকান্ত' প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দেখা যাবে কি না।


ছবির গল্প


এই ছবি সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি। অন্ধ্রপ্রদেশের মছলিপট্টনমে বাসিন্দা শ্রীকান্ত বোলার গল্প যিনি চোখে দেখতে পান না। দৃষ্টিশক্তি না থাকলে আকাশছোঁয়া স্বপ্ন দেখা থেকে তাঁকে কেউ আটকাতে পারেনি। তাঁর স্বপ্ন যে তিনি দেশের প্রথম দৃষ্টিহীন রাষ্ট্রপতি হবেন। স্কুলে শ্রীকান্তের জীবনে আসেন তাঁর শিক্ষিকা জ্যোতিকা, যিনি তাঁর কাছে যশোদা মায়ের মতো। তিনিই শ্রীকান্তকে এই কঠিন জীবনে এগিয়ে চলতে, সমস্ত সমস্যার সঙ্গে লড়াই করা শেখান। সে এগোতেও থাকে, কিন্তু কাল হয় তাঁর অহঙ্কার। তাকে বের করে দেওয়া হয় স্কুল থেকে। এরপর কী হয়, তাকে কি স্কুলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়, কেন সে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে লড়াই করে, এই সবকিছুর জন্য 'শ্রীকান্ত' দেখতে আপনাকে প্রেক্ষাগৃহে যেতে হবে। 


কেমন হয়েছে সিনেমা?


এটি এমন একটি ছবি যা আপনাকে অনুপ্রাণিত করবে, শ্রীকান্ত আপনার অন্দরে এক উদ্দীপনার সঞ্চার করে যে চেষ্টা ও ইচ্ছে থাকলে যা খুশি করা যায়। ফিল্মের প্রথমার্ধ অত্যন্ত ভাল, কোথাও সুতো আলগা হয় না, কখনও বিরক্তি লাগবে না, কিন্তু হ্যাঁ যখন রোম্যান্টিক গান শুরু হয় তখন আপনি বিরতি নিতেই পারেন, এমন একাধিক দৃশ্য আছে যখন চোখে জল আসবে। শ্রীকান্তের সঙ্গে তাঁর সফরে অনায়াসেই রওনা হয়ে যান দর্শক, কিন্তু দ্বিতীয় ভাগে সিনেমা খানিকটা দিকভ্রষ্ট হয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের জন্য বুঝতে নাও পারতে পারেন যে কী হচ্ছে, কিন্তু তারপরেই দুর্দান্ত ক্লাইম্যাক্স পাবেন যা আপনাকে হাততালি দিয়ে উঠতে একপ্রকার বাধ্য করবে। সব মিলিয়ে এই ছবি বেশ ভাল এবং দেখা উচিত।


অভিনয়


শ্রীকান্তের জীবনটাকে এককথায় যাপন করেছেন রাজ কুমার রাও (Rajkummar Rao)। তাঁর অভিনয় দক্ষতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই, কিন্তু এই ছবিতে তাঁর দক্ষতা যে কতদূর বিস্তৃত তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। তাঁর অভিনয় দেখে মনে হতে পারে যে এই বছর শ্রেয়া অভিনেতার পুরস্কারের বড় দাবিদার হতে চলেছেন তিনি। আলায়া এফের কাজ তাঁর স্থানে ভালই। চরিত্র যদিও খুব বড় নয়। ওঁকে পর্দায় আরও খানিকটা সময় দিলে ভাল হত। জ্যোতিকা দুর্দান্ত কাজ করেছেন। শরদ কেলকরের কাজ প্রত্যেকবারের মতোই দারুণ।


আরও পড়ুন: 'Maidaan' Review: প্রেক্ষাগৃহই যেন স্টেডিয়াম, অজয় দেবগণের 'ময়দান' কতটা সফল হল?


পরিচালনা


ছবির পরিচালক তুষার হিরানন্দানি। ছবিতে তাঁর দখল স্পষ্ট নজরে পড়ে। এর আগে তিনি 'সান্ড কি আঁখ' ও 'স্ক্যাপ ২০০৩' পরিচালনা করেছেন। তাঁর চিত্রনাট্য লেখার বিষয়ে অনুভূতি প্রবল এবং তা তাঁর পরিচালনায় স্পষ্ট। কিন্তু ছবির দ্বিতীয় ভাগের গল্প তাঁর পরিচালনাকেও প্রভাবিত করেছে। জগদীপ সিদ্ধু ও সুমিত পুরোহিত যদি দ্বিতীয় ভাগের গল্প আরও খানিকটা ভাল করতেন তাহলে হয়তো এই বছরের সেরা সিনেমা হিসেবে সাড়া ফেলত 'শ্রীকান্ত'।


সবমিলিয়ে, ছোটখাটো খামতি থাকা সত্ত্বেও এই ছবি দেখার মতো এবং দেখা উচিত। যদি আপনি '12th ফেল' পছন্দ করে থাকেন, তাহলে এই ছবিও ভাল লাগবে আপনার।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।