বেজিং:  চিনে বেড়েই চলেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। চিনা সংবাদমাধ্যম সূত্রে শেষ খবর, এখনও পর্যন্ত চিনে ১৯৭৫ জনের দেহে এই ভাইরাসের অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। মৃতের সংখ্যা ৫৬। চায়না পিপলস ডেইলিতে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আক্রান্তদের সকলেই নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিউমোনিয়ায় ভুগছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ৩২৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এর পাশাপাশি, আরও অনেকের দেহে করোনাভাইরাস মেলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। চিনা স্বাস্থ্য কমিশনের আশঙ্কা, মোট ২,৬৮৪ জনের দেহে এই ভাইরাস থাবা বসিয়ে থাকতে পারে। সেগুলি আদৌ করোনাভাইরাস কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
চিনের প্রশাসন জানিয়েছে, সবচেয়ে খারাপ অবস্থা উহান শহরের। এখান থেকেই এই ভাইরাসের প্রথম অস্তিত্ব মেলে। উহান সহ হুবেই প্রদেশের ১৭টি শহর এই ভাইরাস আক্রমণের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।  অধিকাংশ আক্রান্তরা এই দুই প্রদেশের বাসিন্দা। শনিবার, হুবেইতে নতুন ৩২৩জনের দেহে নোভেল করোনাভাইরাস (এন-সিওভি ২০১৯)-এর প্রমাণ মিলেছে। সবমিলিয়ে এই প্রদেশে আক্রান্তর সংখ্যা ১,০৫০ ছাড়িয়েছে। এরমধ্যে ১২৯ জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। মারা গিয়েছেন ৫২ জন।
এদিকে, শনিবার রাতে রাজধানী বেজিংয়ে ১০ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। এই নিয়ে বেজিংয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫১। চিনের সর্ববৃহৎ শহর শাংহাইতে ৪০ জন আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর।
এই পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিনি জানান, দেশ একটা ভয়ানক সময়ের মধ্যে দিয়ে চলছে। তবে, তিনি আশাবাদী, এই সঙ্কট কাটিয়ে উঠবে দেশ। এই ভাইরাসের মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁরা জয়ী হবেন।
করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় ১০ দিনের মধ্যে একটি ১০০০-শয্যার হাসপাতাল তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছে চিনা প্রশাসন। পাশাপাশি, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে উহানে আরও  একটি ১৫০০-শয্যার হাসপাতাল তৈরি করা হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যে দ্রুততার সঙ্গে চিন এই হাসপাতালগুলি গঠন করছে, তার থেকে পরিষ্কার যে অদূর ভবিষ্যতে বড় মহামারীর আশঙ্কা করছে চিনা প্রশাসন।
খবরে প্রকাশ, চিনের সীমানা ছাড়িয়ে হংকং, ম্যাকাউ, তাইওয়ান, নেপাল, জাপান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাবা বসিয়েছে কনোনাভাইরাস। যেমন জাপান থেকে দ্বিতীয় রোগীর দেহে এই ভাইরাসের প্রমাণ মিলেছে।
মহামারী রুখতে ইতিমধ্যেই একটি বিশেষ দল গঠন করেছে চিনের শাসক কমিউনিস্ট পার্টি। সম্প্রতি, শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বাধীন পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটিতে এই দল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেখানে চিনা প্রেসিডেন্ট বলেন, বিভিন্ন সম্প্রদায় ও ক্ষেত্রের মানুষকে একযোগে এগিয়ে এই মহামারীর মোকাবিলা করতে হবে। সকলকে এসে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করে এই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া রুখতে হবে।