লাহৌর: আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ পার্বত্য অঞ্চলে তীব্র ভূমিকম্প। তার রেশ গিয়ে পড়ল পাকিস্তানেও (Pakistan News)। সেখানে ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছেন ন’জন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫০ মানুষ। একাধিক বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে সেখানে। দেশের একাধিক অঞ্চলে প্রভাব পড়েছে ভূমিকম্পের (Pakistan Earthquake)।
আফগানিস্তান-পাকিস্তান এবং তাজিকিস্তান সীমান্তের কাছে ভূমিকম্প হয়
মঙ্গলবার তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ পার্বত্য অঞ্চল। পর পর দু’বার ভূমিকম্প হয় সেখানে। রিখটার স্কেলে প্রথমটির তীব্রতা ছিল ৪.৪। দ্বিতীয়টির তীব্রতা ছিল ৬.৫। আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমের ফৈজাবাদ থেকে ১৩৩ কিলোমিটার দূরের এলাকা ছিল কম্পনের উৎসস্থল। আফগানিস্তান-পাকিস্তান এবং তাজিকিস্তান সীমান্তের কাছে ভূমিকম্প হয়।
আফগানিস্তানে (Afghanistan Earthquake) এই ভূমিকম্পের ফলে কেঁপে ওঠে পাকিস্তানের ইসলামাবাদ, লাহৌর, পেশোয়ার, খাইবার পাখতুনখোয়া। সেখানকার প্রদেশ বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে খাইবার পাখতুনখোয়ায় ন’জনের মৃত্যু হয়েছে। সবমিলিয়ে ন'জন মারা গিয়েছেন। একটি বাড়ির ছাদ ও দেওয়াল ভেঙে পড়ে আহত হয়েছেন ছ’জন। একাধিক বাড়ি ভেঙে পড়েছে সেখানে।
অন্য দিকে, পাকিস্তানের সোয়াট জেলার পুলিশ আধিকারিক শফিউল্লা গন্দাপুর সংবাদমাধ্যমে জানান, প্রায় ১৫০ জন আহত হয়েছেন। যাঁদের অবস্থা গুরুতর, তাঁদের সাইরু টিচিং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাওয়ালপিণ্ডি, কোয়েট্টা, কোহত, লাক্কি মারওয়াত, ডেরা ইসমাইল খান, দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান এবং আরও একাধিক জায়গায় কম্পন অনুভূত হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। বিপদ আঁচ করে সব প্রতিষ্ঠানগুলিকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন। পাকিস্তানের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা মন্ত্রক জানিয়েছে, ইসলামাবাদের সব সরকারি হাসপাতালগুলিতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস, ফেডারেল গভর্নমেন্ট পলিক্লিনিকেও চূড়ান্ত সতর্কতা।
পাক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তানে প্রায় ৩০ সেকেন্ড স্থায়ী হয়েছিল ভূমিকম্প। তাতে বাড়ি থেকে ছুটে বেরিয়ে আসেন সাধারণ মানুষজন। ইসলামাবাদ, লাহৌরের রাস্তায় মানুষের লাইন চোখে পড়ে।
আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প হয়। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পার্বত্য এলাকায়, যা কিনা ইউরেশিয়ান এবং ইন্ডিয়ান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থল। তার প্রভাব পড়ে ভারত-পপাকিস্তানের মতো পড়শি দেশগুলিতেও। এর আগে, গত ২৯ জানুয়ারিই ৬.৩ তীব্রতায় কেঁপে উঠেছিল ইসলামাবাদ। ১৯ জানুয়ারি খাইবার পাখতুনখোয়ায় ৫.৬ তীব্রতায় ভূমিকম্প হয়।গত বছর আফগানিস্তানে ৬.১ তীব্রতায় ভূমিকম্পে কমপক্ষে ১০০০ মানুষের মৃত্যু হয়।
ভারতের, দিল্লি, উত্তরাখণ্ড, কাশ্মীর, এমনকি রাজস্থানেও কম্পন অনুভূত
মঙ্গলবার ভারতের, দিল্লি, উত্তরাখণ্ড, কাশ্মীর, এমনকি রাজস্থানেও আফগানিস্তান থেকে ভূমিকম্পের রেশ এসে পৌঁছয়। । নয়ডা, দিল্লিতে কম্পন অনুভূত হয়। রাত ১০টা নাগাদ রাস্তায় বেরিয়ে আসেন সাধারণ মানুষজন। শিশুদের কম্বলে মুড়িয়ে বের করে আনা হয় বাড়ি থেকে। গাজিয়াবাদেও আতঙ্কে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন মানুষজন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভূমিকম্পের মুহূর্তের ভিডিও শেয়ার করেছেন অনেকে। তাতে সিলিং ফ্যান, আলো দুলতে দেখা গিয়েছে। কাশ্মীর এবং জয়পুরেও কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে খবর।