নয়াদিল্লি: যত দ্রুত সম্ভব, গাজার পাঁচটি স্কুল খালি করে দিতে হবে, নির্দেশ দিল ইজরায়েল। শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জের প্যালেস্তিনীয় উদ্বাস্তু সংক্রান্ত সংগঠন এ কথা জানিয়েছে। সঙ্গে আরও জানায়, সবকটি স্কুলই গাজার অল-অহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালের কাছে। এই হাসপাতালেই কয়েক দিন আগে তীব্র বিস্ফোরণে অন্তত ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল বলে খবর। অভিযোগের আঙুল ওঠে ইজরায়েলের দিকে। পরে অবশ্য সন্দেহের তির ঘুরে যায় হামাসের অনুসারী সংগঠন ইসলামিক জিহাদের দিকে। এর মধ্যেই নতুন হুঁশিয়ারি। তা হলে কি এবার স্কুল বিল্ডিং-ও মাটিতে মিশে যাবে? তেমনই আশঙ্কা প্যালেস্তাইন রেড ক্রিসেন্টের। 


উদ্ধার ২ মার্কিন পণবন্দি...
ভারতীয় সময় অনুযায়ী শুক্রবার রাতের দিকে খবর আসে, হামাসের হাতে পণবন্দি, দুই মার্কিন নাগরিককে মুক্ত করা গিয়েছে। আপাতত ওই মা এবং মেয়ে আইডিএফের নিরাপদ হেফাজতে রয়েছেন। আদতে শিকাগোর বাসিন্দা ওই দুজন আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে ইজরায়েল গিয়েছিলেন। তার পর যুদ্ধ শুরু হতে হামাসের হাতে পণবন্দি হন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দুজনের মুক্তির খবরে যারপরনাই খুশি। তবে এখনও আমেরিকার একাধিক বাসিন্দাই পণবন্দি রয়েছেন। তাঁদের মুক্ত করতে প্রাণপণ চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মার্কিন প্রশাসন সূত্রে খবর। প্রেসিডেন্ট বাইডেন আরও জানিয়েছেন, এই মুক্তির ক্ষেত্রে ইজরায়েলের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেছে কাতারও। এতেই শেষ নয়। কাতার আশ্বস্ত করেছে, হামাসের হাতে পণবন্দি সব দেশের নাগরিকদের মুক্ত করতে ইজরায়েল এবং হামাসের সঙ্গে ভবিষ্যতেও কথা চালিয়ে যাবে তারা। তবে সূত্রের খবর, সেই কাজ না হওয়া পর্যন্ত ইজরায়েল যাতে গাজায় 'গ্রাউন্ড ইনভেশন' না করে সে ব্যাপারে নেতানইয়াহু প্রশাসনকে বোঝানোরও চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলি গোপনে ইজরায়েলের সঙ্গে কথা বলে চলেছে বলে খবর। যদিও আইডিএফের মুখপাত্র জানিয়ে দেন, পরবর্তী পর্যায়ের যুদ্ধের জন্য তারা তৈরি। কিন্তু গাজার সাধারণ বাসিন্দাদের ভোগান্তি যে চোখে দেখা যাচ্ছে না, সেটির কী হবে? রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ত্রাণ বিলি শুরুর পর যাতে প্রত্যেকের কাছে তা পৌঁছয় সে জন্যও ট্রাকে পর্যাপ্ত জ্বালানি লাগবে। সে জন্য যেন পর্যাপ্ত জ্বালানি থাকে United Nations Relief and Works Agency-র।


গাজার ছবি...
গত ৭ অক্টোবর, হামাসের হঠাৎ হামলার পর থেকে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে, আর আজ চোদ্দোতম দিন। প্যালেস্তাইনের দাবি, এখনও পর্যন্ত ইজরায়েলের জবাবি হামলায় গাজা স্ট্রিপে ৪ হাজার ১২৭ জন মারা গিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১ হাজার ৬০০-র বেশি শিশু। জখমের সংখ্যা ১৩ হাজারের বেশি। ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে মারা গিয়েছেন ৮১ জন। ইজরায়েলের তরফেও নিহতের সংখ্য়া নেহাত কম নয়। যুদ্ধের প্রথম দিকে, বেঞ্জামিন নেতানইয়াহুর প্রশাসন আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল, হাজার হাজার নাগরিককে পণবন্দি করেছে হামাস। তবে যুদ্ধের চোদ্দোতম দিনে এসে আইডিএফ জানাচ্ছে, পণবন্দির সংখ্যা সম্ভবত ১০০-২০০-র মধ্যে। এঁদের বেশিরভাগ বেঁচেও রয়েছেন, দাবি আইডিএফের। কবে এঁদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে? কবেই বা শেষ হবে যুদ্ধ? এখনও উত্তর নেই। কিন্তু ইজরায়েল যে ভাবে গাজা অবরোধ করে রেখেছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বাড়ছে।এমনকি মিশর-সহ পশ্চিম এশিয়ার আরও দেশে এই প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা স্পষ্ট। এসবের মধ্যে, গাজার ত্রাণের জন্য একমাত্র ভরসা, রাফাহ ক্রসিং নিয়েও চিন্তার মেঘ জমছে। এদিন এই ক্রসিং দিয়েই মিশরে ত্রাণ প্রবেশের কথা ছিল। কিন্তু সম্ভবত, এই ত্রাণ পৌঁছতে আরও একটা দিন অপেক্ষা করতে হবে। অর্থাৎ যন্ত্রণা সামান্য কমতে নিদেনপক্ষে আরও একটি দিন অপেক্ষা করতে হবে গাজার বাসিন্দাদের। যদিও    রাষ্ট্রপুঞ্জের উদ্বাস্তু সংক্রান্ত সংগঠনের হাই কমিশনারের মতে, বর্তমানে যা পরিস্থিতি তাতে যে রকম সামরিক হামলা চলছে সেটুকুও জারি থাকলে ওই একচিলতে ভূখণ্ড কার্যত ধ্বংস হয়ে যাবে। 


 আরও পড়ুন:পৃথিবীর গায়ে 'কালো ছোপ'! 'অভূতপূর্ব' এক দৃশ্য ধরা পড়ল নাসার ক্যামেরায়