পটনা: শ্রীকৃষ্ণের কালিয়া দমনের পৌরাণিক কাহিনি পড়েছি আমরা। কিন্তু তাই বলে বিষাক্ত সাপকেই কামড়! বিহার থেকে এমনই রোমহর্ষক ঘটনা সামনে এল। সেখানে একটি বিষাক্ত গোখরো সাপকে কামড়ে দু’টুকরো দিল দু’বছরের শিশু। সাময়িক অসুস্থ হয়ে পড়লেও, শিশুটি সুস্থ আছে। কিন্তু মারা গিয়েছে গোখরো সাপটি। এই ঘটনায় হতবাক স্থানীয়রা। ঘটনাচক্রে শিশুটির নাম গোবিন্দ কুমার।

বিহারের বেতিয়া জেলায় এই ঘটনা ঘটেছে। সেখানকার একটি গ্রামে বাড়ি গোবিন্দ নামের শিশুটি। বাড়িতে খেলনা নিয়ে বসে খেলছিল সে। সেই সময়ই তার কাছাকাছি এসে পড়ে একটি দু'ফুটের গোখরো সাপ। ছোট্ট হাতে সাপটিকে তুলে নেয় গোবিন্দ। আর তার পর সটান দাঁত বসিয়ে দেয় সাপের শরীরে। 

জানা গিয়েছে, হালকা করে কামড় নয়, শক্ত করে সাপটিকে কামড়ে ধরে গোবিন্দ। চিবোতে শুরু করে সাপটিকে। এমন চিবোয় যে সাপটিকে কামড়ে দু’টুকরো করে দেয় সে। গোবিন্দর ঠাকুমা মাতেশ্বরী দেবীই সবার আগে সাপ হাতে তাকে দেখতে পায়। তাঁর চিৎকার শুনে বাকিরা ছুটে আসেন। 

মাতেশ্বরী সংবাদমাধ্যমে বলেন, “বাচ্চার হাতে সাপ দেখে চমকে উঠি। তড়িঘড়ি ছুটে যাই। কিন্তু তত ক্ষণে সাপটিকে কামড়ে টুকরো করে দিয়েছে। সামনে মরে পড়েছিল সাপটি।” সাপটিকে কামড়ে টুকরো করে ফেলার পর গোবিন্দও অজ্ঞান হয়ে যায়। বাড়ির লোকজন স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায় তাকে। সেখান থেকে ছোট্ট ছেলেটিকে বেতিয়ার সরকারি মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। 

গোবিন্দ সাপকে কামড়ে মেরে ফেলেছে শুনে হতবাক চিকিৎসকরাও। এই ঘটনাকে ‘বিরল’ বলে উল্লেখ করেছেন তাঁরা। তাঁরা জানিয়েছেন, সাপটির মাথায় কামড় বসিয়েছিল গোবিন্দ। সেই আঘাত সহ্য় না করতে পেরেই মারা যায়। আর সাপের গায়ে কামড় বসানোর জেরে অজ্ঞান হয়ে যায় গোবিন্দ। তবে খুব বেশি প্রভাব পড়েনি শিশুশরীরে। অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল। এখন সে সুস্থ। 

চিকিৎসকদের মতে, সময়ে চিকিৎসা হওয়াতেই শিশুটিকে বাঁচানো গিয়েছে। আপাতত গোবিন্দ স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে। তবে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে সে। পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, লাগাতার বৃষ্টিতে কোনও ভাবে তাঁদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে থাকবে সাপটি। কোনও ভাবে গোবিন্দর কাছাকাছি পৌঁছে যায়, আর তার পরই ওই ঘটনা ঘটে। 

পৃথিবীতে যত বিষধর সাপ রয়েছে, তার মধ্যে গোখরো অন্যতম। গোখরোর ছোবলে দেশের প্রায় বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অহরহ মৃত্যুর খবর উঠে আসে। সম্প্রতি পঞ্জাবের লুধিয়ানায়, বাড়ির ছাদে ঘুমনোর সময় গোখরোর কামড়ে দুই বোনের মৃত্যু হয়।