নয়াদিল্লি: গুণমান বিচারের পরীক্ষায় ব্যর্থ নিত্য ব্যবহৃত ৪৮টি ওষুধ। তা নিয়ে জারি হল সতর্কতা (Drugs Quality Test)। সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন-এর (CDSCO) তরফে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। CDSCO-র ওয়েবসাইটে পরীক্ষায় উতরোতে না পারা ওষুধের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ১ হাজার ৪৯৭টি ওষুধের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছিল। তার মধ্যে গুণমান পরীক্ষায় উতরে গিয়েছে ১ হাজার ৪৪৯টি ওষুধ। ৪৮টি নিত্য ব্যবহৃত ওষুধ ব্যর্থ হয়েছে পরীক্ষায়।


CDSCO-র ওয়েবসাইটে যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে ব্যর্থ ওষুধের তালিকায় রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিকস, অ্যান্টি ডায়বেটিক, ক্যালসিয়াম, কার্ডিয়াক ওষুধ। মৃগীরোগে বহুল ব্যবহৃত গাবাপেন্টিন, হাইপারটেনশনে ব্যবহৃত টেলমিসার্টান, অ্যান্ডি ডায়বিটিস কম্বিনেশন গ্লিমেপিরাইড এবং মেটফর্মিনের মতো ওষুধ রয়েছে তালিকায়। আবার HIV-র রিটোনেভির ওষুধও ব্যর্থ হয়েছে পরীক্ষায়।


এ ছাড়াও, ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট, প্রোবায়োটিক্স এবং মাল্টিভিটামিন হিসেবে ব্যবহৃত একাধিক ওষুধ ব্যর্থ হয়েছে পরীক্ষায়। ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ১২, ফলিক অ্যাসিড, নিয়াসিনামাইড ইঞ্জেকশনও পরীক্ষায় উতরোতে পারেনি বলে জানানো হয়েছে। অ্যামোক্সিসিলিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি৩ ট্যাবলেট, টেলমিসার্টান ট্যাবলেট এবং আলবেনডেজোল ট্যাবলেটও ব্যর্থ পরীক্ষায়।


CDSCO-র তালিকা নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে গ্লেনমার্ক ফার্মাসিউটিক্যালসের এক মুখপাত্র জানান, বিষয়টে তাদের অগোচরে নেই। কিন্তু টেলমা এ এম ট্যাবলেটের যে ব্যাচের ওষুধ পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে, সেটি জাল ওষুধ। গ্লেনমার্ক ওই ব্যাচের ওষুধ তৈরি করেনি। CDSCO-কে বিষয়টি জানানো হয়েছে সংস্থার তরফে। উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। তালিকা থেকে যাতে তাদের ওষুধের নাম সরিয়ে দেওয়া হয়, অনুরোধ জানানো হয়েছে তার জন্যও। 


অ্যাবট ইন্ডিয়া-র তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে, স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে থাইরোনর্ম ট্য়াবলেটের (থাইরক্সিন সোডিয়াম) একটি ব্যাচ বাজার থেকে তুলে নিয়েছে তারা। যে ব্যাচটি তুলে নেওয়া হয়েছে, সেটি AEJ0713. তারিখ ছিল ২০২৩-এর মার্চ। হাইপোথাইরোডিসমে ওই ওষুধ ব্যবহৃত হয়। সংস্থার দাবি, ওই ব্যাচের ওষুধ শুধুমাত্র মধ্যপ্রদেশ এবং তেলাঙ্গনাতেই বিক্রি হয়েছে।


CDSCO-র গুণমান পরীক্ষায় শুধুমাত্র ওষুধই নয়, একাধিক সংস্থার চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং প্রসাধনীও ব্যর্থ হয়েছে। আরও যে যে সংস্থার তৈরি ওষুধের নাম উঠে এসেছে, সেগুলি হল, পিএসইউ কর্নাটত অ্যান্ডিবায়োটিকস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস, উত্তরাখণ্ডের সাইনোকেম ফার্মাসিউটিক্যালস, হরিয়ানার নেস্টর ফার্মাসিউটিক্যালস, উত্তরপ্রদেশের JPJM প্যারেন্টেরাল্স, সোলানের রোনাম হেলথকেয়ার। গুণমান পরীক্ষায় ব্যর্থ ওষুধ চিকিৎসা পদ্ধতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে। রোগীর ক্ষতি হতে পারে যেমন, তেমনই রোগ ছড়িয়েও পড়ে বেশি।  এ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে তদন্ত শুরু হয়।


তবে এই প্রথম নয়, ভারতের তৈরি ওষুধ নিয়ে এর আগে বিদেশ থেকেও একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। এমনকি ভারতে তৈরি ওষুধ খেয়ে শিশুমৃত্যুর অভিযোগও সামনে এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে মার্চ মাসেই ৭০টি ওষুধ তৈরির সংস্থায় তল্লাশি চালানো হয়। তাতে গলদ ধরা পড়ায় ১৮টি সংস্থার লাইসেন্সও বাতিল করা হয় সরকারের তরফে।