লখনউ: লখনউতয়ে হিন্দু সমাজ পার্টির সভাপতি কমলেশ তিওয়ারি হত্যা মামলায় ধৃত ৫। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে ইমাম মৌলানা আনওয়ারুল হক। কমলেশের স্ত্রী কিরণের অভিযোগ, ২০১৫ সালে হিন্দু সমাজ পার্টির সভাপতির মাথা কাটার জন্য দেড় কোটি টাকার ইনাম ঘোষণা করে ফতোয়া জারি করেছিল আনওয়ারুল ও অপর অভিযুক্ত মহম্মদ মুফতি নইম কাজমি। তারাই খুন করিয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই আনওয়ারুল ও কাজমিকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া গুজরাতের সুরাত থেকে তিনজনকে আটক করা হয়েছে।


এদিকে, আজ কমলেশের বাড়িতে তাঁর দেহ পৌঁছয়। স্বামীর হত্যার বিচার না পেলে সন্তানদের নিয়ে আত্মহত্যা করার হুমকি দিয়েছেন কিরণ। তিনি জানিয়েছেন, ‘কমলেশকে প্রতিদিন হুমকি দেওয়া হত। আমাদের পরিবারের নিরাপত্তা চাই। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ না এলে আমরা দেহ সৎকার করব না।’ কমলেশের অপর এক আত্মীয়র দাবি, দুই ছেলেকে সরকারি চাকরি দিতে হবে।

উত্তরপ্রদেশের ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ ও পি সিংহ সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের যোগ পাওয়া যায়নি। গুজরাত থেকে যাদের ধরা হয়েছে তাদের নাম ফৈজান ইউনুস ভাই, মৌলানা মহসিন শেখ ও রশিদ আহমেদ খুরশিদ আহমেদ পঠান। উত্তরপ্রদেশ ও গুজরাতের পুলিশ আধিকারিকরা তাদের জেরা করছেন। ঘটনাস্থল থেকে মিষ্টির প্যাকেট পাওয়া গিয়েছে। সেটা দেখেই গুজরাত পুলিশের একটি দল সুরাতের সংশ্লিষ্ট মিষ্টির দোকানে যায়। সেই দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে ফৈজানকে চিহ্নিত করা হয়। পরে বাকি দু’জনকে আটক করা হয়।’

উত্তরপ্রদেশের ডিজিপি আরও জানিয়েছেন, ‘তদন্ত ও যৌথ জেরায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, সুরাত থেকে ধৃত তিন ব্যক্তি কমলেশ তিওয়ারি হত্যার চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত ছিল। রশিদের ভাই ও গৌরব তিওয়ারি নামে অপর এক ব্যক্তিকেও জেরা করা হয়। তবে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে কমলেশকে ফোন করে সুরাতে হিন্দু সমাজ পার্টির হয়ে কাজ করার কথা জানিয়েছিলেন গৌরব।’

পুলিশ সূত্রে খবর, পরিকল্পনা অনুযায়ী, লখনউয়ের নাকা এলাকায় হিন্দু সমাজ পার্টির অফিসে কমলেশের সঙ্গে দেখা করতে যায় দুই ব্যক্তি। তাদের হাতে ছিল মিষ্টির বাক্স। কমলেশের সঙ্গে আধঘণ্টা কথা বলে তারা। অভিযোগ, চা, দইবড়া খেয়ে মিষ্টির বাক্স থেকে ধারালো অস্ত্র বের করে একজন তাঁকে কোপাতে শুরু করে, অন্যজন গুলি চালায়। পুলিশের দাবি, অন্তত ১২ বার কোপানো হয় কমলেশকে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

এর পর উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজির সঙ্গে কথা বলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী তথা লখনউয়ের সাংসদ রাজনাথ সিংহ। এ ব্যাপারে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মুখ্যসচিব ও পুলিশের কাছে ঘটনার রিপোর্ট চেয়েছেন তিনি। তবে কী কারণে খুন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

কমলেশের ভাইপো অবশ্য বলেছেন, বিজেপি নেতা শিবকুমার গুপ্তের সঙ্গে মন্দিরের জমি নিয়ে তাঁর কাকার বিবাদ চলছিল। ১০ দিন আগে তিনি কমলেশকে খুন করে দেওয়ার হুমকি দেন। কমলেশের স্ত্রী বলেছেন, রামজানকী মন্দিরের ট্রাস্ট নিয়ে ঝামেলা হচ্ছিল তাঁদের।