কলকাতা: বাংলা থেকে অনেকেই বিদেশে গিয়ে সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে গিয়েছেন। তাঁরা নিজেদের কর্ম বা পেশার ক্ষেত্রে বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়ে সম্মানও পেয়েছেন। সেই ধারা বজায় রেখে এবার ইতালিতে সম্মান পেতে চলেছেন এক বঙ্গসন্তান। তাঁর নাম বিপ্লব দেবনাথ। তিনি ইতালির ট্রেভিসো প্রদেশের মন্টেবেলুনা শহর থেকে এবিপি আনন্দকে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছিলেন। চোখের সামনে মৃত্যুমিছিল দেখে বাংলার মানুষকে বারবার সতর্ক করে দিয়েছিলেন তিনি। তবে নিজে সবাইকে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিলেও, নিজের জীবনের পরোয়া না করেই তিনি অন্যদের সাহায্য করতে রাস্তায় নেমেছেন। মন্টেবেলুনা শহরে যে সমস্ত বয়স্ক ব্যক্তিরা প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করার জন্য সুপারমার্কেটে যেতে পারছেন না, তাঁদের বাজার করে দেওয়ার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন বিপ্লববাবু। সমাজের প্রতি এই দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনেরই স্বীকৃতি পাচ্ছেন তিনি।

ইতালি থেকে ফোনে এবিপি আনন্দকে পেশায় ফ্লাওয়ার ডিজাইনার এই বঙ্গসন্তান বললেন, ‘দাদা, আমরা বাঙাল। লড়াই আমাদের রক্তে। আমরা কোনও কাজে ভয় পাই না। লকডাউনের শুরুর দিকে আমি একদিন সুপারমার্কেট থেকে ফেরার সময় দেখতে পাই একজন বয়স্ক মহিলা হাতে ব্যাগ নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন না। তাঁকে সাহায্য করি। তিনি আমাকে আশীর্বাদ করেন। এরপর থেকেই শহরের সব বয়স্ক মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছি। তাঁদের বাজার করে দিচ্ছি। সবাই আমাকে আশীর্বাদ করছেন। এখানকার কাগজে আমার ছবিও ছাপা হয়েছে। সোমবার স্থানীয় কাউন্সিলর এসে আমাকে বলেছেন, একজন বিদেশি হয়েও তুমি যে কাজটা করলে, সেটা ইতালির কেউ করেনি। তুমি এই কাজের স্বীকৃতি পাবে। লকডাউন উঠে গেলে তোমাকে রোমে যেতে হবে। সেখানে তোমাকে সম্মান জানানো হবে।’


ইতালিতে লকডাউন চললেও, সরকার যেভাবে সাধারণ মানুষকে সবরকমভাবে সাহায্য করছে, তাতে মুগ্ধ বিপ্লববাবু। তিনি জানিয়েছেন, সুপারমার্কেটগুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সব জিনিসপত্র রয়েছে। পরিবারের একজন করে গিয়ে বাজার করে আনতে পারছেন। তার জন্য বিশেষ পাস দেওয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেকটি বাড়িতে মাস্ক পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। কেউ মাস্ক না পরে রাস্তায় বেরোলে জরিমানা হবে। সরকারের সক্রিয় ভূমিকার ফলে ইতালিতে করোনায় মৃত্যুর হারও কমছে।