নয়াদিল্লি: পুনর্ব্যবহারযোগ্য মিসাইল তৈরির উপর জোর দিতে হবে। অর্থাৎ যে ক্ষেপণাস্ত্র একবার উৎক্ষেপনের পর ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে এবং তা পুনর্বার ব্যবহার করা যাবে। মৃত্যুর ঠিক এক মাস আগে, ডিআরডিওর অধিকর্তা সতীশ রেড্ডিকে এমনটাই উপদেশ দিয়েছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম। সেই সময় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা ছিলেন রেড্ডি।
তিনি জানিয়েছেন, উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বভার নেওয়ার পর কালামের বাসভবনে গিয়ে দেখা করেন তিনি। তখনই পুনর্ব্যবহারযোগ্য মিসাইল নিয়ে ভাবনাচিন্তা করার ব্যাপারে তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন কালাম।
এই সাক্ষাতের ঠিক এক মাস পরেই মৃত্যু হয় প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির। শেষজীবনে কালামের দেওয়া এই উপদেশ তিনি ভোলেননি, জানিয়েছেন সতীশ রেড্ডি। কালামের বাড়ির বিরাট বড় লাইব্রেরিতে বসেই হয়েছিল কথা। আগামীদিনে কোন বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে, সে-বিষয়ে অনেক আগে থেকেই ভাবনাচিন্তা করতেন কালাম, জানালেন তিনি।
২৭ জুলাই এপিজে আব্দুল কালামের মৃত্যুবার্ষিকী। এ-বছর মহান বৈজ্ঞানিকের মৃত্যুবার্ষিকীর আগে সেই শেষ সাক্ষাতের কথাই সবার সঙ্গে ভাগ করে নিলেন ডিআরডিও অধিকর্তা।
২০১২ সালে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, তৎকালীন ডিআরডিও অধিকর্তা ভি কে সারস্বত জানান, ভারত পুনর্ব্যবহারযোগ্য মিসাইল তৈরি করার পরিকল্পনা করছে। তিনি বলেন, আমাদের কাছে প্রোপালশন প্রযুক্তি ও রি-এন্ট্রি প্রযুক্তি আছে। যার জোরে একটি ক্ষেপণাস্ত্র পে লোড বা অস্ত্র বহন করার পর, আবার তাকে ফিরিয়ে আনতে পারে।
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট এখন যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো ইতিমধ্যেই সফলভাবে পুনর্ব্যবহারযোগ্য লঞ্চ ভেলিকল ও টেকনোলজি ডেমেস্ট্রেটরের সফলভাবে পরীক্ষা করেছে।
অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের হাত ধরে ভারতে ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে বিপ্লব আনেন কালাম। ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে বিপ্লব আনার জন্য তাঁকে ‘ভারতের মিসাইল ম্যান’ নাম দেওয়া হয়। ১৯৯৮ সালে তাঁর হাত ধরেই পোখরানে সফল পারমাণবিক বিস্ফোরণের পরীক্ষা করে ভারত। ইসরোয় ভারতের প্রথম স্পেস লঞ্চ ভেহিকলের প্রধান কারিগর ছিলেন তিনি। ১৯৮১ সালে পদ্মভূষণ, ১৯৯০ সালে পদ্ম বিভূষণ এবং ১৯৯৭ সালে ভারতরত্ন পান এই প্রখ্যাত বিজ্ঞানী।