কলকাতা: অসম-মিজোরাম সীমানা সংঘর্ষ নিয়ে ট্যুইট করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ট্যুইটে লেখেন, অসম-মিজোরাম সীমানায় হিংসার ঘটনায় স্তম্ভিত। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা। কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের চোখের সামনে এই ধরনের ঘটনা গণতন্ত্রের মূলেই আঘাত করে। 


সীমানা নিয়ে সংঘাতে গতকালই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে অসম-মিজোরাম সীমানাবর্তী অঞ্চল। মৃত্যু হয়েছে অসম পুলিশের ছয় জওয়ানের। উত্তপ্ত অসম-মিজোরাম সীমানাবর্তী ভাইরেনতে। যা নিয়েই বিবাদে জড়িয়েছেন দুই পড়শি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে অমিত শাহের হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন তাঁরা। 


সীমানা নিয়ে বিবাদ দীর্ঘদিনের। আর তা নিয়ে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল অসম-মিজোরাম সীমানাবর্তী কোলাশিবের ভাইরেনতে। ঝরল রক্ত-ও। মৃত্যু হল অসম পুলিশের ছয় জওয়ানের। আর এই ঘটনা ঘিরে বিবাদে জড়িয়েছে মিজোরাম ও অসম সরকার। মিজোরামের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ট্যুইটে দাবি করেছেন,


কোলাশিবের পুলিশ সুপার যখন CRPF ক্যাম্পে অসম পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন, তখন অসম পুলিশ গুলি চালায়, টিয়ার গ্যাসের গ্রেনেডও ছোড়ে। জবাবে গুলি চালায় মিজোরাম পুলিশ। শনিবারই, শিলংয়ে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এরপরই, মিজোরাম পুলিশের তরফে দাবি করা হয়, রবিবার মিজোরামের ভাইরেনতে-তে ছ’টি কৃষকদের কুঁড়েঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে অসম-মিজোরাম সীমানার পরিস্থিতি।


আর, তা নিয়েই ট্যুইটারে বিবাদে জড়িয়েছেন দুই পড়শি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। দু’জনই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে অমিত শাহের হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন। বিজেপি ও তার জোট সঙ্গী মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা ট্যুইটে এই ভিডিও পোস্ট করে বলেন, অমিত শাহজি, দয়া করে এই বিষয়টি দেখুন। এটা অবিলম্বে থামাতে হবে।


পাল্টা ট্যুইটে আরও একটি ভিডিও দিয়ে বিজেপি শাসিত অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা, মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীকে ট্যাগ করে তিনি লেখেন, 'মিজোরামের কোলাশিবের পুলিশ সুপার আমাদের বলছেন পোস্ট থেকে সরে যেতে। যতক্ষণ না তা হচ্ছে, ততক্ষণ সাধারণ মানুষ কোনও কথা শুনবেন না বা হিংসা রুখবেন না। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে আমরা সরকার চালাব? আশা করছি, আপনি দ্রুত বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করবেন।'


বিতর্কিত ভাইরেনতের একদিকে মিজোরামের কোলাশিব। উল্টোদিকে, অসমের কাছাড় জেলা। এখানেই দু’রাজ্যের সীমানা নিয়ে শতাব্দী প্রাচীন বিবাদ। যার জেরে এর আগেও একাধিকবার দুই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। মামলা হয়েছে সর্বোচ্চ আদালতে। সীমানা বিবাদ নিয়ে দু’পক্ষই স্থিতাবস্থা বজায় রাখবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল কিন্তু, সোমবার ফের সীমানা সংঘাতে রক্ত ঝরল। এনিয়ে, কেন্দ্রকে দোষারোপ করেছে কংগ্রেস। সূত্রের খবর, সীমানা সংঘাত নিয়ে ফোনে দু’রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন অমিত শাহ।


উল্লেখ্য, অসম-মিজোরাম সীমানায় সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে নিয়ে ট্যুইটে মোদি সরকারকে বিঁধেছেন রাহুল গাঁধীও। তিনি ট্যুইটে লেখেন, মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফের ব্যর্থ। মানুষের জীবন নিয়ে তাঁর মনে শুধুই বিদ্বেষ ও অবিশ্বাস। ভারত এক ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকে এগোচ্ছে।