নয়াদিল্লি: জঙ্গিদের সঙ্গে একই গাড়িতে যাওয়ার সময় ডিএসপি দেবেন্দ্র সিংহ গ্রেফতার হওয়ার পর জম্মু ও কাশ্মীরের আরও কয়েকজন সন্দেহভাজন পুলিশকর্তার গতিবিধির উপর নজরদারি চালানো হতে পারে। পুলিশ সূত্রে এমনই জানা গিয়েছে।


গত শনিবার শ্রীনগর-জম্মু হাইওয়ে থেকে গ্রেফতার হন ডিএসপি। তিনি জঙ্গিদের নিয়ে চণ্ডীগড় যাচ্ছিলেন বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের। তাঁকে জেরা করা হচ্ছে। জেরার মুখে দেবেন্দ্র জানিয়েছেন, অবসরপ্রাপ্ত ও বর্তমানে কর্তব্যরত কয়েকজন পুলিশকর্তা জঙ্গিদের সঙ্গে যুক্ত। এই তথ্য খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

এক তদন্তকারী আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ), রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিক্যাল উইং (র), ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) ও মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সের (এমআই) আধিকারিকরা ইলেকট্রনিক সারভাইলেন্স ইউনিটের (ইএসইউ) সাহায্যে সন্দেহহভাজন পুলিশ আধিকারিকদের ফোনে কথোপকথনের উপর নজর রাখা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত তদন্তে জানা গিয়েছে, বর্তমান বাসস্থান জম্মু এবং জন্মস্থান কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার ত্রালে জঙ্গিদের সাহায্য করছিলেন দেবেন্দ্র। তাঁর সঙ্গে আর কারা জড়িত ছিলেন, সেটাই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

২০০১ সালে সংসদ হামলায় ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আফজল গুরু জঙ্গিদের সঙ্গে দেবেন্দ্রর যোগ থাকার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু আদালতে দেওয়া তার বয়ানকে গুরুত্ব দেননি জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ এবং গোয়েম্দা বিভাগের কর্তারা। আদালতে হলফনামা দিয়ে এবং সংবাদমাধম্যমে বিবৃতির মাধ্যমে আফজল দাবি করেছিল, সংসদে হামলার সঙ্গে যুক্ত থাকা জঙ্গিদের দিল্লিতে নিয়ে আসা, সেখানে তাদের থাকার জন্য ফ্ল্যাট ভাড়া করা এবং পুরনো সাদা অ্যাম্বাসাডার গাড়ি কিনতে বাধ্য করেছিলেন দেবেন্দ্র। তখন থেকেই এই পুলিশকর্তার দিকে সন্দেহের তির গিয়ে পড়ে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এতদিন তিনি বহাল তবিয়তে ছিলেন। তিনি জঙ্গিদের আর কীভাবে সাহায্য করেছেন, কোন কোন জঙ্গি হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, সেটা এখন তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীদের সন্দেহ, জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের অনেক অফিসার ও কর্মীর সঙ্গে জঙ্গিদের যোগ রয়েছে। এর আগে ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১২ সালের জুনের মধ্যে শ্রীনগরে ১৩টি জঙ্গি হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হন কনস্টেবল আবদুল রশিদ শিগান। ২০০২ সালেও গ্রেফতার হন কুপওয়ারা জেলার সোগাম থানার স্টেশন হাউস অফিসার গুলাম রসুল ওয়ানি ও কনস্টেবল আবদুল আহাদ।