লেহ্: চিন-ভারত সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যেই ২ দিনের লাদাখ সফরে সেনাপ্রধান জেনারেল এমএম নারাভানে। সেনা সূত্রে খবর, সেনাপ্রধান লাদাখে ফিল্ড অফিসারদের সঙ্গে কথা বলবেন। খতিয়ে দেখবেন ভারতীয় সেনার প্রস্তুতি।


বৃহস্পতিবার সকালে লেহ্তে পৌঁছন সেনাপ্রধান। পূর্ব লাদাখে প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত তিনটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের বাস্তব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন তিনি। সেখানেই ফিল্ড কমান্ডারদের থেকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন।


সম্প্রতি লাদাখে প্যাংগং লেক এলাকায় চিনা সেনার আগ্রাসন রুখে দিয়েছে ভারত। ভারতীয় সেনারা রুখে দাঁড়ানোর পর পিছু হঠে চিনের লাল ফৌজ। এর ফলে সুবিধাজনক অবস্থানে থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ওপর নজরদারি চালাতে পারছে ভারতীয় সেনা।


সেনা সূত্রে খবর, লেকের দক্ষিণ প্রান্ত সুরক্ষিত করার পর এখন ভারতীয় ভূখণ্ডে থাকা উত্তর প্রান্তেও বাড়তি বাহিনী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য, যাতে চিন কোনওপ্রকার এখান দিয়ে আগ্রাসন না চালাতে পারে।


প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের দাবি, উত্তরপ্রান্তটি বিশেষভাবে স্পর্শকাতর। কারণ, এখানে চিনা বাহিনীর উপস্থিতি অনেকটাই বেশি। প্যাংগং লেকের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ দখল করে রেখেছে চিন। যে কারণে, ভারতকে এখানে বাড়তি বাহিনী মোতায়েন করতে হচ্ছে।


প্রসঙ্গত, গত এক সপ্তাহের মধ্যে দু-দুবার ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে চিনা ফৌজ। প্রথমে ২৯ ও ৩০ তারিখের মাঝ রাতে, লাদাখে প্যাংগং লেকের দক্ষিণে ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে চিনের লাল ফৌজ।


দুদিন পর, ফের পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর চুমার সেক্টরে ফের অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে চিন। কিন্তু, দুবারই তা আটকে দেয় ভারতীয় সেনা।


সম্প্রতি, লাদাখ সীমান্তে বেশ কিছু এলাকা দখল-মুক্ত করে ভারতীয় সেনা। সূত্রের খবর, প্যাংগং লেক সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকার দখল নিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। পিছু হঠেছে লাল ফৌজ।


নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতের চুমার এলাকায় ফের অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে চিনা সেনা। হেলমেট এবং ব্ল্যাকটপ এলাকায় ২০০-৩০০ জন চিনা সেনার গতিবিধি লক্ষ্য করে তৎপর হয় ভারতীয় জওয়ানরা। তা দেখে পিছিয়ে যায় চিনা সেনা।


পাশাপাশি, প্যাংগং সো লেক সংলগ্ন হেনান পোস্টে সেনা মোতায়েন করে ভারত। চার কিলোমিটার এগিয়ে রেকিন পোস্টেও মোতায়েন করা হয়েছে ভারতীয় সেনা। হেনান থেকে রেকিনের দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। ওই এলাকা এখন ভারতের দখলে বলে সূত্রের খবর।


এই পরিস্থিতিতে, সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমন করতে মঙ্গলবারের পর বুধবারও চুশুলে বসেছিল ভারত-চিন সামরিক ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ের বৈঠক। কিন্তু, সাত-ঘণ্টা বৈঠক চললেও কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি। এর আগে, মঙ্গলবারও এই বৈঠক হয়েছিল।