নয়াদিল্লি: এক দেশ এক পতাকা। সম্প্রতি এই স্লোগানকে সামনে রেখে জম্মু কাশ্মীর থেকে সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫-এ ধারা তুলে নিয়েছে কেন্দ্র। এবার কি ‘সারা দেশে এক ভাষা’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে হিন্দিকে জাতীয় ভাষা হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে মোদি সরকার? শনিবার হিন্দি দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্যের পর এই অভিযোগই তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা।

এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতে বহু ভাষা রয়েছে। প্রতিটি ভাষারই নিজস্ব, স্বাতন্ত্র্য ও তাৎপর্য রয়েছে। কিন্তু বিশ্বে ভারতের পরিচিতির জন্য একটা নির্দিষ্ট ভাষার খুবই প্রয়োজন। দেশের কোনও ভাষা যদি ভারতের ঐক্য ও সংহতিকে অটুট রাখতে পারে, তবে তা বহুপ্রচলিত হিন্দি ভাষাই।’

অমিত শাহের এই মন্তব্যের পরই প্রবল প্রতিক্রিয়া শুরু হয় জাতীয় রাজনৈতিক মহলে। একমাত্র কি হিন্দিভাষাই পারে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতে? প্রশ্ন তোলে কংগ্রেস। হিন্দি দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েও মাতৃভাষার প্রতি সওয়াল করে ট্যুইট করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিলি লেখেন, ‘হিন্দি দিবসের শুভেচ্ছা রইল। আমাদের উচিত সব ভাষা ও সংস্কৃতিকে সমান গুরুত্ব দেওয়া। আমরা অনেক ভাষা শিখতে পারি। কিন্তু আমাদের মাতৃভাষাকে কোনওভাবেই ভোলা উচিত নয়।’

গত বছর জাতীয় শিক্ষানীতির খসড়া প্রকাশ করে মোদি সরকার। যেখানে হিন্দি ভাষাকে বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়। যার প্রবল বিরোধিতা করে দক্ষিণের রাজনৈতিক দলগুলি। আর এদিন অমিত শাহের মন্তব্যের পর কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে সেই দক্ষিণ থেকেই। ডিএমকে সভাপতি এম কে স্ট্যালিন বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘এনিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। এটা ইন্ডিয়া, হিনডিয়া নয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গী ভারতের সংহতির পক্ষে যন্ত্রণাদায়ক। এমনটা হলে আরেকটা ভাষা যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করবে ডিএমকে।’

দক্ষিণের আরও এক নেতা জেডিএসের এইচ ডি কুমারস্বামী ট্যুইট করেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার দেশজুড়ে ‘হিন্দি দিবস’ পালন করছে। কবে ‘কন্নড় ভাষা দিবস’ হিন্দির মতোই সংবিধানসম্মতভাবে সরকারি ভাষা হিসেবে পালিত হবে?’

এআইএমআইএম সভাপতি আসাদুদ্দিন ওয়েইসি ট্যুইট করেন, ‘হিন্দি সব ভারতীয়র মাতৃভাষা নয়। সংবিধানের ২৯ নম্বর অনুচ্ছেদে বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির কথা বলা হয়েছে। হিন্দি, হিন্দু ও হিন্দুত্বর থেকে অনেক বড় হল ভারত।’

সবমিলিয়ে এবার হিন্দি ভাষা দিবসেও শুরু হল শাসক-বিরোধী চাপানউতোর।