৯ বছর বয়সে বাবাকে হারান রহমান। এরপর তাঁকে বড় করে তোলেন মা। স্বাভাবিকভাবেই মায়ের প্রতি এই সঙ্গীত পরিচালকের আলাদা শ্রদ্ধা রয়েছে। তিনি অস্কারের মঞ্চেও মায়ের কথা উল্লেখ করেন। আজ তিনি মাতৃহারা হওয়ার পর বহু মানুষ সমবেদনা জানাচ্ছেন।
রহমানের পরিবার শুরুতে হিন্দু ছিল। স্বামী রাজাগোপালা কুলশেখরা শেখর অসুস্থ হয়ে পড়ার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এই সঙ্গীত পরিচালকের মা। সেই সময় স্বামীর সুস্থতা কামনা করে তিনি বিভিন্ন মন্দির, গির্জায় গিয়ে প্রার্থনা করতেন। এমনকী, তাঁর স্বামী যাতে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে পারেন, তার উপায় খোঁজার জন্য জ্যোতিষবিদ, ধর্মগুরুদেরও দ্বারস্থ হতেন তিনি। কিন্তু কেউই পথ দেখাতে পারেননি। সেই সময় তিনি এক সুফি ধর্মপ্রচারকের সাক্ষাৎ পান। তাঁর সঙ্গে দেখা করে এবং কথা বলে তিনি গভীরভাবে প্রভাবিত হন। রহমানের বাবা প্রয়াত হওয়ার কয়েক বছর পরে গোটা পরিবারই ধর্মান্তরিত হয়। দিলীপ কুমার থেকে বদলে করিমা তাঁর ছেলের নতুন নাম দেন আল্লাহ রাখা রহমান। এরপর তাঁদের জীবন বদলে যায়।
রহমানের বাবাও অত্যন্ত গুণী সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন। তিনি মূলত মালয়লম ছবিতে কাজ করতেন। শতাধিক ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেন তিনি। তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে রহমানও সঙ্গীতের জগতে পা রাখেন। তিনি প্রথম জীবনে বিভিন্ন তথ্যচিত্র ও বিজ্ঞাপনের সঙ্গীত পরিচালনা করতেন। এরপর ন’য়ের দশকের শুরুতে তামিল ছবি ‘রোজা’-র মাধ্যমে চলচ্চিত্রের দুনিয়ায় পা রাখেন তিনি। প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করেন তিনি। সারা দেশে জনপ্রিয় হয় ‘রোজা’-র গান। পরবর্তীকালে ‘বম্বে’ ‘রং দে বাসন্তী’ সহ বহু ছবিতে কাজ করেন তিনি। ‘স্লামডগ মিলিয়নেয়ার’ ছবির জন্য তিনি অস্কার পান। এছাড়া ৬ বার জাতীয় পুরস্কার, ২ বার গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডস সহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্মভূষণও পেয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালে ‘লে মাস্ক’ ছবি পরিচালনাও করেন তিনি।
কিছুদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘দিল্লি ৬’-এর সঙ্গীত পরিচালক রহমান জানান, তিনি নতুন রূপে প্রকাশিত 'মসককলি' গানটি শুনে হতাশ। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে পুরনো গানের লিঙ্ক শেয়ার করে পোস্ট করেন তিনি। লেখেন, 'আসল গানটি উপভোগ করুন'।