গুয়াহাটি: অসমের তেজপুরে ডিটেনশন সেন্টারে বন্ধি থাকা এক ‘বাংলাদেশীর’ মৃত্যুর ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। মৃত ব্যক্তির নাম দুলাল চন্দ্র পাল (৬৫)। ২০১৭ সালে তাঁকে বাংলাদেশী বলে ঘোষণা করে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। এরপর থেকেই তিনি বন্দি ছিলেন। তাঁকে ভারতের নাগরিক ঘোষণা না করা পর্যন্ত মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করেছেন ছেলে আশিস পাল।


ডেপুটি কমিশনার মানবেন্দ্র প্রতাপ সিংহ জানিয়েছেন, ‘মৃত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তাঁর ডায়াবেটিসও ছিল। গত শুক্রবার তেজপুর মেডিক্যাল কলেজে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেদিনই চিকিৎসার পর তাঁকে ডিটেনশন সেন্টারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পরের দিন তিনি ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তাঁকে আবার তেজপুর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর একমাত্র ছেলে পেশায় মোটর মেকানিক আশিস পালের দাবি, বাবাকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে ঘোষণা না করা পর্যন্ত তিনি দেহ নেবেন না। সেই কারণে মৃতদেহ এখনও পর্যন্ত গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজের মর্গে রাখা আছে। এই ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে অসমের বাঙালিদের সংগঠন। অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার পরাগ কাকোটি এই মৃত্যুর তদন্ত করবেন।’

তেজপুর জেল ও ডিটেনশন সেন্টারের সুপার মৃন্ময় দাওকা জানিয়েছেন, সোমবার শোনিতপুর জেলায় আশিসের বাড়িতে যান অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার কুলেন শর্মা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুমল মহন্ত। তাঁরা আশিসকে দেহ নেওয়ার অনুরোধ জানান। কিন্তু আশিস সেই অনুরোধ নাকচ করে দেন। মঙ্গলবারও জেলা প্রশাসনের অন্য একটি দল আশিসের বাড়িতে যান। কিন্তু তাতেও কোনও ফল হয়নি।

প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র অপূর্বকুমার ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘অসম প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি রিপুন বরার নেতৃত্বে একটি দল আলিসিঙ্গা গ্রামে গিয়েছিল। সেই গ্রামেরই বাসিন্দা ছিলেন দুলাল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশী হিসেবে ঘোষিত এক ব্যক্তির মৃতদেহ আমরা কীভাবে নেব? হিন্দু বাঙালিদের রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। কিন্তু দুলালের মৃত্যুর পর রাজ্য সরকার সহমর্মিতাও জানাচ্ছে না। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে বিষয়টির সমাধান করা উচিত মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের।’