নয়াদিল্লি: দেশের সব রাজ্যকে তাদের এলাকার মধ্যে থাকা রোহিঙ্গা ও বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের বিস্তারিত বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করতে বলল কেন্দ্র। দেশব্যাপী নিরাপত্তা ব্যবস্থা চাঙ্গা করার প্রক্রিয়ারই অংশ এটা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের জনৈক অফিসার জানিয়েছেন, রাজ্যগুলিকে বলা হয়েছে নিজ নিজ পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশ দিতে যাতে তারা রোহিঙ্গা ও অবৈধ ভাবে এ দেশে আসা লোকজনের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করে। রোহিঙ্গা ও অনুপ্রবেশকারীরা দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে বলে তাদের যাতে খুঁজে বের করা যায়, সেজন্যই বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করার এই নির্দেশ।
প্রসঙ্গত, ভারতে প্রায় ১৪০০০ রোহিঙ্গা বসবাস করে যাদের নাম রাষ্ট্রপুঞ্জের উদ্বাস্তু কমিশনারের কাছে নথিভুক্ত রয়েছে। তবে তার বাইরে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা এ দেশে বেআইনি ভাবে বসবাস করছে বলে নানা মহলের দাবি। গত জুলাইয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সংসদে দাঁড়িয়ে দাবি করেন, ভারতে চলে আসা রোহিঙ্গাদের একাংশ নানা বেআইনি কাজকর্ম করছে এবং রোহিঙ্গাদের ভারতে অনুপ্রবেশ রুখতে নিরাপত্তাবাহিনী মজুত করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কর্তাটি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নথি নেওয়া হবে মানে এই নয় যে, তাদের বৈধ পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। আধার জাতীয় বৈধ নথি কেবলমাত্র তাদেরই দেওয়া যেতে পারে যারা বৈধ ভাবে এ দেশে এসেছেন, কমপক্ষে ৬ মাস ধরে বসবাস করেছেন। কিন্তু রোহিঙ্গারা বেআইনি অনুপ্রবেশকারী হওয়ার ফলে আধার পাওয়ার বৈধ মাপকাঠিতেই পড়েন না।
সু্প্রিম কোর্টও গত বুধবার সরকারকে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের আধার কার্ড দিতে নিষেধ করেছে।
রোহিঙ্গাদের ‘বেআইনি অনুপ্রবেশকারী’ তকমা দিয়ে গত বৃহস্পতিবারও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেছেন, রাজ্যগুলিকে ওদের গতিবিধি নজরে রাখতে, ওদের ঠিকুজিকোষ্ঠী সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে যাতে ওদের মায়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়।
এদিকে বিএসএফের বিদায়ী ডিরেক্টর জেনারেল কে কে শর্মা সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বেআইনি অনুপ্রবেশকারী, সন্ত্রাসবাদী ও অপরাধীদের অনুপ্রবেশ রোধে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সীমান্তে ফাঁকফোকরগুলি বন্ধ করার জন্য ‘সম্পূর্ণ নিশ্ছিদ্র’ স্মার্ট প্রযুক্তি বসাচ্ছে বলে জানিয়ে দাবি করেছেন, বিএসএফ মায়ানমার থেকে পালানো বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার ভারতে অনুপ্রবেশ ‘নিয়ন্ত্রণে রাখায়’ সফল হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা সাফল্যের সঙ্গে ভারতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধ করেছি। আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আমরা রোহিঙ্গাদের ভারতে ঢুকতে দিইনি।