কলকাতা: লকডাউনের মধ্যে বায়না করলে প্রতিমার দামে পাওয়া যাবে ২০ শতাংশ ছাড়!  সোশাল মিডিয়ায় প্রতিমা বিক্রির এমন অভিনব ছাড়ের বিজ্ঞাপন এযাবৎকালে  কেউ কখনও দেখেনি। লকডাউন চলাকালীন কোনও নতুন খদ্দের প্রতিমার বায়না করলে ২০ শতাংশ ছাড় দেবেন বলে ঠিক করেছেন শিল্পী প্রদ্যুৎ পাল। এবিপি আনন্দকে তিনি জানিয়েছেন, মূলত অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণেই এই ভাবনা তাঁর মাথায় এসেছে। ফোনে লেকটাউনের বাড়ি থেকে প্রদ্যুৎ বাবু জানালেন, “করোনার প্রকোপে কুমোরটুলির অবস্থা খুবই খারাপ। রং করা অবস্থায় রয়ে গিয়েছে অন্নপূর্ণা, শীতলা ঠাকুর। এমনকি দুর্গা পুজোর বাঁধা খদ্দেররাও এবার আসেনি। এমনই দুরবস্থা, বড় খদ্দেররাও বলছেন একচালার ঠাকুর নেবেন। তার ওপর শিল্পীদেরও তো বেতন দিতে হবে। তাই প্রতিমা বিক্রিতে ২০ শতাংশ ছাড়ের কথা ভেবেছি।”


অতীতে অনলাইন বিপণনীতে কুমোরটুলিকে ভিন্ন দিশা দেখিয়েছিলেন এই প্রদ্যুৎ পালই। ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে কলকাতা থেকে ক্যালিফর্নিয়াতে প্রতিমা পাঠানো যায়, করে দেখিয়েছিলেন তিনি। এরপর শুধু আমেরিকাই নয়, ব্রিটেন সহ ইউরোপের একাধিক দেশে প্রতিমা পাঠিয়েছেন তিনি। তবে এবার করোনার কারণে একটা প্রতিমাও বিদেশে পাঠানো যায়নি। বাতিল হয়েছে বায়নাও। এই অবস্থায় যে অর্থ সঙ্কট তৈরি হয়েছে, তার থেকে প্রতিকার পেতে এবার ‘ডিসকাউন্ট অফার’ এনে ফের চমক দিলেন ।


পূর্ববঙ্গীয় এই শিল্পভারতী স্টুডিওর প্রতিমার কদর বিশ্ব জুড়েই। রমেশ পাল, পরেশ পাল, নেপাল পালরা যখন নিজেদের ‘ব্র্যান্ড’ করে তুলছেন তখন একেবারে অন্য পথে হেঁটে চমকে দিয়েছেন গোরাচাঁদ পাল এবং সন্স। প্রতিমার বৈচিত্র্য, শৈলী, কাগজের গহনা ব্যবহার করে কলকাতায় তাক লাগিয়ে দিয়েছে শিল্পভারতী। বছর কয়েক আগেও গোরাচাঁদ পালের ছেলে গোপাল পালের তৈরি কুমোরটুলি পার্কের প্রতিমা দর্শকদের নজর কেড়েছিল। তারও আগে শ্রীভূমির ঠাকুরে সাড়া ফেলেছিলেন তিনি। তবে তাঁদের ঘরের প্রতিমার দাম তুলনায় অনেকটাই বেশি হওয়ায় অনেক পুজো কমিটি চেয়েও শিল্পভারতীর ঠাকুর নিতে পারে না।


প্রদ্যুৎ পাল জানিয়েছেন, ছাড়ের কথা শুনে অনেক পুজো কমিটিই এবার আগ্রহ দেখিয়েছে। কাকিনাড়ার একটি পুজো কমিটি এই ‘অফার’ পেয়ে প্রতিমা বায়নাও করে দিয়েছে। প্রাথমিক কথা হয়েছে আরও অনেক কমিটির সঙ্গেই। প্রদ্যুৎবাবু আশাবাদী, এখন প্রতিমা বায়না হলে আগামীতে অনেকটাই সামলে ওঠা যাবে অর্থনৈতিক সঙ্কট। সচল হবে কুমোরটুলিও।