নয়াদিল্লি: ৫ ম্যাচের অভিজ্ঞতার কাছে ভারী পড়ল ১৫ বছরের ‘ক্রিকেট এক্সপেরিয়েন্স’। ঋষভ পন্থের বিশ্বকাপ খেলার অন্তরায় হয়ে দাঁড়াল দীনেশ কার্তিকের দেড় দশকের অভিজ্ঞতা। কেকেআর অধিনায়ক তথা দক্ষিণী উইকেটরক্ষক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন ২০০৪ সাল থেকে। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ স্কোয়াডেও ছিলেন তিনি। ওই বছরই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্যও ছিলেন দীনেশ। মাঝে বেশ কিছুদিন দলের বাইরে থাকলেও প্রায়ই তাঁকে ফেরানো হয়েছে। সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বিগত ১৫ বছরের অন্তত ৫ বার ভারতীয় দলে কামব্যাক করেছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। ২০১৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলেও সামিল করা হয়েছিল তাঁকে।
সব মিলিয়ে দীনেশ এখনও পর্যন্ত খেলেছেন ৯১টি ওয়ানডে। রান করেছেন ১ হাজার ৭৩৮। একটি শতরান না থাকলেও এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের ঝুলিতে রয়েছে ৯টি অর্ধশতরান। সর্বোচ্চ ৭৯। তবে সম্প্রতি নিদাহাস ট্রফিতে (টি-টোয়েন্টি) ধোনির অবর্তমানে ফিনিশারের ভূমিকায় নেমে চর্চায় চলে আসেন দীনেশ। বিশেষ করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৮ বলে অপরাজিত ২৯ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে সুখ্যাতি অর্জন করেন তিনি।
তাপরপর আইপিএলে কেকেআরের মতো ফ্রেঞ্জাইজির অধিনায়ক হওয়া। মোটের ওপরে ভারতীয় দলের সেকেন্ড উইকটরক্ষক হিসেবে তিনিই ছিলেন অনেকের প্রথম পছন্দ। ঋষভ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখতেই সেই জায়গা কিছুটা হলেও নড়বড়ে হয়ে পড়ে। মাহি পরবর্তী সময়ে ঋষভকে নিয়েই সবথেকে বেশি স্বপ্ন বুনতে শুরু করে সংশ্লিষ্ট মহল। সন্দিপ পাতিল, কপিল দেব, বীরেন্দ্র সহবাগের মতো প্রাক্তনীরা তো ভেবেই নিয়েছিলেন, ঋষভ ইংল্যান্ডে যাচ্ছেন এবং বিশ্বকাপ খেলছেন।
তবে সেটা হল না। আরও অপেক্ষা করতে হবে ২১ বছরের ঋষভকে। সোমবার বিশ্বকাপের ভারতীয় দল ঘোষণার পর প্রধান নির্বাচক এমএসকে প্রসাদ জানিয়ে দিলেন, দীনেশের বড় ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা বেশি তাই তিনি দলে। তবে ৪ নম্বর স্থানের জন্য তাঁকে যে একেবারেই ভাবা হচ্ছে না, সেকথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। এমএসকে প্রসাদ বলেন, “কেবল মাহি (মহেন্দ্র সিংহ ধোনি) চোট পেলেই দ্বিতীয় উইকেটরক্ষকের কথা ভাবা হবে। বড় ম্যাচে খেলার অভিজ্ঞতা কার্তিকের বেশি, সে কারণেই তাঁকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়ছে।” বরং তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ভারতীয় দলের ব্যাটিং লাইন আপে চারে ভাবা হয়েছে অলরাউন্ডার বিজয় শঙ্কর কিংবা কেদার যাদবকেই। তৃতীয় ওপেনার হিসেবে থাকছেন লোকেশ রাহুল।প্রয়োজনে তাকে মিডল অর্ডারেও খেলানো হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ইংল্যান্ডে ৮ বোলার নিয়ে যাচ্ছে ভারত। যা অতীতে নিঃসন্দেহেই কল্পনাতীত ছিল। বুমরাহ, ভুবনেশ্বর, সামি, এই তিন পেসার সহ স্কোয়াডে রয়েছে কুলচা জুটি। কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহল, দুই স্পিনারই দলে রয়েছেন। অলরাউন্ডার হিসেবে আছেন হার্দিক, বিজয়, জাদেজা। এই তিন ক্রিকেটারও ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বোলিংয়েও সাবলীল।প্রয়োজনে হাত ঘুরিয়ে দিতে পারেন কেদার যাদবও। দল নির্বাচন নিয়ে এমএসকে প্রধান জানান, শেষ একবছরের পারফরম্যান্সের ওপর দাঁড়িয়েই দল বাছাই করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, জুনের ৫ তারিখ বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে ভারত। প্রথম ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। তার ঠিক ৭২ ঘণ্টা পরই ভারত মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়ার। এরপর একে নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ওয়েস্টইন্ডিজের মুখোমুখি হবে ভারত।
আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতীয় দল:
বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), রোহিত শর্মা (সহ অধিনায়ক), শিখর ধবন, লোকেশ রাহুল, কেদার যাদব, মহেন্দ্র সিংহ ধোনি (উইকেট কিপার), দীনেশ কার্তিক (উইকেট কিপার), রবীন্দ্র জাদেজা, হার্দিক পাণ্ড্য, বিজয় শঙ্কর, কুলদীপ যাদব, যুজবেন্দ্র চাহল, যশপ্রীত বুমরাহ, ভুবনেশ্বর কুমার, মহম্মদ সামি।