ভুবনেশ্বর: বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ফণীর জেরে ওড়িশায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৪৩। এক সপ্তাহ আগে ফণী আছড়ে পড়েছিল।তারপর থেকে রাজ্যের উপকূলবর্তী ঝড়-বিধ্বস্ত বহু এলাকায় এখনও পানীয় জলের অভাব প্রকট। নেই বিদ্যুত্। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা কোথাও কোথাও রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। আবার কোথাও কোথাও সরকারি আধিকারিকদের নিগ্রহের খবরও পাওয়া গিয়েছে।
সরকারি সূত্রে খবর, কটক ও খুড়দা জেলা থেকে আরও দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কেন্দ্রাপাড়া, জগতসিংহপুর ও কটল জেলার শহর এলাকায় বিদ্যুত্ ও জল সরবরাহ ফের শুরু হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। এরইমধ্যে মৌলিক সুবিধাগুলির অভাবের অভিযোগে পারাদ্বীপ থেকে কটকগামী রাস্তা এবং ভুবনেশ্বরের সঙ্গে পুরীর সংযোগকারী জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় লোকজন।
একই ধরনের বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে রাজ্যের রাজধানীতেও। সেখানে এখনও কোনও কোনও জায়গায় বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি।
ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুরী শহর। ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধাগুলির অভাবের কারনে এখানকার স্থানীয়দের কেউ কেউ সাময়িকভাবে অন্যত্র চলে গিয়েছেন।যদিও সরকারের দাবি, যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে ত্রাণের কাজ চলছে।
পুরির মৌসিমা লেনের বাসিন্দা রথীন্দ্র মিশ্র বলেছেন, আমরা পুরী ছেড়ে কোরাপুটে চলে এসেছি। কারণ, ওখানে বিদ্যুত্ ও জলের সরবরাহ কবে স্বাভাবিক হবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। ভুবনেশ্বরেরও বিদ্যু ও জলের সংকট। যেহেতু অনেকেই চলে আসছেন, তাই হোটেল ও গেস্ট হাউসের মালিকরা ভাড়াও অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছেন।
রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ত্রাণ না পাওয়ায় জাজপুর জেলার বিঞ্ঝপুর তহশিলের ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা রাজস্ব বিভাগের আধিকারিকদের মারধর করেন বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। জাজপুর জেলা কালেক্টর আর কে দাস বলেছেন, সরকারি আধিকারিকদের হেনস্থার ঘটনায় যাঁরা জড়িতে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপকূলবর্তী জেলাগুলির প্রায় সমস্ত বিদ্যুতের অফিসগুলিতে আধিকারিকদের ওপর হামলার আশঙ্কা এড়াতে পুলিশ কর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছে বলে সরকারের এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন।
এরইমধ্যে স্পেশ্যাল রিলিফ কমিশনার (এসআরসি) বি পি শেঠি দুর্গতের ত্রানসামগ্রী ও নগদ অবিলম্বে বিতরণের জন্য খুড়দার জেলা কালেক্টরকে চিঠি লিখেছেন। শেঠি বলেছেন, উপযুক্ত প্রাপকদের প্রাপ্য ত্রাণ প্যাকেজ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি দিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ৩ মে ঘূর্ণিঝড় ফণী ওড়িশায় আছড়ে পড়েছিল।