নয়াদিল্লি: রাজধানীর অতি সুরক্ষিত এলাকায় বোমা বিস্ফোরণের পর ফের একবার প্রশ্নের মুখে পড়ল দিল্লির নিরাপত্তা। দিল্লি পুলিশ এখন অভিযুক্তদের স্কেচ তৈরি করতে ব্যস্ত, পাশাপাশি তারা মনে করছে, এই বোমা বিস্ফোরণে কৃষক আন্দোলনের সুরক্ষার ওপরেও বড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে। কাল গভীর রাত পর্যন্ত দিল্লি পুলিশের একাধিক দল শহরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে।
গতকাল বিকেল ৫টা ৫ নাগাদ রাজধানীর নিরাপদতম ভিআইপি জোনে ইজরায়েলি দূতাবাসের কাছে হয় স্বল্প ক্ষমতাসম্পন্ন এই আইইডি বিস্ফোরণ। এতে কেউ হতাহত না হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকটি গাড়ি। দিল্লি পুলিশ শুধু এইটুকু জানিয়েছে, বোমাটির ক্ষমতা বেশি ছিল না, বিস্ফোরণের কারণ ছিল মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি। কিন্তু বিশেষ চিন্তার বিষয় হল, যখন বিস্ফোরণ ঘটে, তখন ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে বিটিং রিট্রিট প্রোগ্রাম চলছিল, অনুষ্ঠানের আগে নিরাপত্তা এজেন্সিগুলি গোটা এলাকার সুরক্ষা ব্যবস্থা তন্ন তন্ন করে খতিয়ে দেখে। তারপরেও এই ঘটনা। জানা যাচ্ছে, ইজরায়েলি দূতাবাস থেকে মাত্র দেড়শ মিটার দূরে এক চলন্ত গাড়ি থেকে একটি প্যাকেট ছুঁড়ে ফেলা হয়, তারপরই ফাটে বোমা। প্রাথমিক তদন্তে খবর, এই বোমা বাজারে বিক্রি হওয়া মামুলি জিনিসপত্র দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। আর ছুঁড়ে ফেলা ওই প্যাকেট থেকে পাওয়া গিয়েছে একটি চিঠি. তা ইজরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে। বলা হয়েছে, এটা ছিল ট্রেলার। আমরা জেনারেল কাশেম সোলেমানির হত্যার বদলা নেব। চিঠিতে ইরানের বিশিষ্ট নিউক্লিয়ার বিজ্ঞানীকে হত্যার প্রসঙ্গও উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে এই বিস্ফোরণে ইরান যোগ রয়েছে কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে।
কিন্তু এখনও পর্যন্ত দিল্লি পুলিশের কাছে পরিষ্কার নয়, এই বিস্ফোরণের পিছনে কোন সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের হাত রয়েছে। বিস্ফোরণস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে সন্দেহজনক খাম, আধপোড়া ওড়না। সূত্রের খবর, গোটা ঘটনার পিছনে নাশকতামূলক ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। কারণ ঘটনাস্থল থেকে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উদ্ধার করেছে পুলিশ। যে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে, সেখানে দুই ব্যক্তিকে ক্যাব থেকে নেমে ওই এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে।
দিল্লি পুলিশের উদ্বেগ, রাজধানীর নানা সীমানায় যে কৃষকরা কৃষি আইনের বিরোধিতায় ধর্নায় বসেছেন, তাঁদের ওপরেও বড়সড় জঙ্গি হামলা হতে পারে। কৃষক আন্দোলনের নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়েছে। রাতে দিল্লি পুলিশ, বিভিন্ন সুরক্ষা এজেন্সির সঙ্গে বৈঠক করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। কী জাতীয় বিস্ফোরণ? কী কারণ? বিস্ফোরণে কার হাত? সেই সূত্র খুঁজছে এনআইএ।