দিল্লির হারের পর বাংলাতেও বিজেপির কৌশল বদলের দাবি উঠতে শুরু করে দলের অন্দরে। দলের সহ সভাপতি চন্দ্র বসু সম্প্রতি বলেন, আমাদের মূল দায়িত্ব মানুষের পাশে থাকা। স্বাস্থ্য-শিক্ষায় কী কাজ, জানানো। আপের কাজের তালিকা মানুষ সমর্থন করেছে। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাসের স্লোগান কার্যকর করতে হবে। দিল্লি এবং বাংলা কসমোপলিটান জায়গা। বিভাজনের রাজনীতির চেষ্টা করলে মানুষ গ্রহণ করতে রাজি নয়। এই পরিস্থিতিতে দরজায় কড়া নাড়থে পুরভোট। যাকে বিধানসভা ভোটের সেমিফাইনাল হিসেবেই দেখছেন পর্যবেক্ষকরা। এই প্রেক্ষাপটে কি দিল্লির বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলার পুরভোটে উন্নয়নকেই মূল অস্ত্র করবে বিজেপি? দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিন্হা বলেন, আমরা চাই পুরসভা ভোট হোক উন্নয়ন নিয়ে। এরাজ্যে পুরসভা মানেই তো দুর্নীতি, কাটমানি। ২১-এর নির্বাচনের আগে দেখাতে চাই, আন্তরিকতা থাকলে কীভাবে উন্নয়ন করা যায়।
তৃণমূল নেতা ও পরিষদীয় প্রতিমন্ত্রী তাপস রায় অবশ্য বিজেপির এই কৌশল পরিবর্তনের ইঙ্গিতকে গুরুত্ব না দিয়ে বলেন, বিজেপি উন্নয়নের কথা বলে কোন মুখে। গোটা দেশকে রসাতলে পাঠিয়েছে। ওদেন হিডেন অ্যাজেন্ডা আসলে মেরুকরণ। বুঝতে পারছে মানুষ প্রত্যাখ্যান করছে। তাই বলছে। কোনও লাভ হবে না। মানুষ চালাকি ধরে ফেলবে।
বাম-কংগ্রেসের অবশ্য দাবি, বিজেপির পক্ষে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতিকে ত্যাগ করা অসম্ভব! কারণ, এর বাইরে ওদের ভোটে জেতার কোনও উপায় নেই। সিপিএম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, এসব মুখের কথা। বন থেকে পশুকে বের করা যায়, মন থেকে বন বের করা যায় না। বিজেপির অন্য কোনও হাতিয়ার নেই। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, যদি করে খুব ভাল। কিন্তু, যে দলটা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিয়ে বড় হয়েছে, তারা হঠাৎ উন্নয়ন করবে, এটা কেউ বিশ্বাস করে না।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের ফল অনুযায়ী কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল এগিয়ে আছে ৯০টি ওয়ার্ডে, বিজেপি ৫১টিতে এবং বাম-কংগ্রেস ৩টিতে। শেষমেষ পুরভোটে কী হবে, তার উত্তর আর কয়েক মাসের মধ্যেই পাওয়া যাবে।