রায়পুর: ছত্তিসগঢ়ের বিলাসপুরে মর্মান্তিক ঘটনা। হোমিওপ্যাথিক ওষুধ খেয়ে মারা গেল একই পরিবারের আট জন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি পাঁচ জন। গত মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটেছে। সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, একই পরিবারের ১৩ জন ওই অ্যালকোহোলিক হোমিওপ্যাথিক ওষুধ খেয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে আট জনেরই মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি ওই পরিবারের বাকি পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সিএমও-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই হোমিওপ্যাথি ওষুধ খাওয়ার কারণেই ওই পরিবারের সদস্যদের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তদন্তকারীদের একটি দল অনুসন্ধান চালাচ্ছে।
সিএমও জানিয়েছেন, ওই পরিবারের সদস্যা ড্রোসেরা নামের হোমিওপ্যাথি ওষুধ খেলেছিলেন। ওই ওষুধে দেশি মদ সহ ৯০ শতাংশ অ্যালকোহল রয়েছে। এই ওষুধ যিনি প্রেসক্রাইব করেছিলেন, সেই চিকিৎসক পলাতক বলে জানা গেছে।
এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সিরগিট্টি থানার অন্তর্গত কোর্মি গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। যে আটজনের মধ্যে চারজন বাড়িতেই মঙ্গলবার রাতে মারা যান। অন্য চারজনের বুধবার হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। বিলাসপুরের পুলিশ সুপার প্রশান্ত অগ্রওয়াল এ কথা জানিয়েছেন।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, কমলেশ ধুরি (৩২), অক্ষ ধুরি (২১), রাজেশ ধুরি (২১) ও সর্মু ধুরি (২৫) ড্রোসেরা-৩০ নামে হোমিওপ্যাথি সিরাপ মঙ্গলবার রাতে খেয়েছিলেন। এরপরই তাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় এবং তাঁরা মারা যান । তাঁদের কোভিড হয়েছে সন্দেহ করে বাড়ির লোকজন কাউকে না জানিয়েই শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন। খেমচাঁদ ধুরি (৪০), কৈলাস ধুরি (৫০), দীপক ধুরি (৩০)-ও ওই ওষুধ খেয়েছিলেন। তাঁদের বিলাসপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই মৃত্যুর খবর পেয়ে গ্রামে ছুটে আসে পুলিশের দল। বুধবার গ্রামে এসে পুলিশ দেখে,স্থানীয় আরও যে পাঁচজন এই সিরাপ খেয়েছিলেন, তাঁদেরও অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের চারজনকে ছত্তিসগড় ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসে পাঠানো হয়েছে। আর একজন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আধিকারিক সূত্রে খবর, স্থানীয় এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ওই সিরাপ তাঁদের দিয়েছিলেন। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, মদের বিকল্প হিসেবে অতিরিক্ত মাত্রায় ওই সিরাপ তাঁরা খেয়েছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ, ময়নাতদন্তের পরেই স্পষ্ট হবে বলে আধিকারিকরা জানিয়েছেন।