নয়াদিল্লি: আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় বৃহস্পতিবার সু্প্রিম কোর্টে জামিনের আবেদন পেশ করলেন পি চিদম্বরম। সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার এই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বিচারবিভাগীয় হেফাজতে তিহার জেলে আছেন। জামিনে বাইরে থাকলে তিনি সাক্ষীদের সরাসরি বা পরোক্ষে প্রভাবিত করতে পারেন, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্ট তাঁর জামিনের আবেদন নাকচ করে দেওয়ার কয়েকদিন বাদে শীর্ষ আদালতে গেলেন তিনি। চিদম্বরমের হয়ে যত দ্রুত সম্ভব শুনানির জন্য তাঁর আর্জির উল্লেখ করেন তাঁর আইনজীবী কপিল সিবাল। তিনি এই আবেদন পেশ করেন বিচারপতি এন ভি রামান্নার বেঞ্চে, যার বাকি সদস্যরা হলেন বিচারপতি সঞ্জীব খন্না, বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারি। তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য চিদম্বরমের আবেদন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে বেঞ্চ।
গত সোমবার বিচারপতি বিচারপতি সুরেশ কুমার কাইত বলেন, রাগের মাথায় মুহূর্তের আবেগ, উত্তেজনার বশে কেউ খুন করে বসতে পারে। কিন্তু আর্থিক অপরাধ হয় ঠান্ডা মাথায়, হিসাব-ছক কষে, যার উদ্দেশ্য থাকে ব্যক্তিগত ফায়দা তোলা, তার পরিণতির কথা না ভেবেই। সিবিআইয়ের তরফে হাইকোর্টে চিদম্বরমের জামিনের পিটিশনের বিরোধিতা করে বলা হয়, আইনপ্রণেতা আইনভঙ্গকারী হয়ে উঠতে, বিচার, শাস্তি থেকেও রেহাই পেতে পারেন না।
যদিও চিদম্বরমের দুই কৌঁসুলি সিবাল ও অভিষেক মনু সিংভি সিবিআইয়ের বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলেন, চিদম্বরম যে প্রতারণা ও ফৌজদারি ষড়যন্ত্র করেছেন বলে অভিযোগ, তা গুরুতর নয়, তাঁকে জামিন দেওয়া উচিত অবশ্যই। তাঁরা এও বলেন, চিদম্বরমকে যে অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে, তাতে মাত্র সাত বছর পর্যন্ত কারাবাসের সাজার সংস্থান আছে।
সিবিআই বলেছে, এপর্যন্ত হওয়া তদন্তে প্রকাশ, অর্থমন্ত্রী থাকাকালে চিদম্বরম বেআইনি সুবিধা চেয়েছিলেন, তা মেনে নিয়ে তাঁকে ও তাঁর ছেলে কার্তিকে দেশে, বিদেশে অর্থ দেওয়া হয়েছিল। বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত বোর্ডের অনুমোদনের ব্যাপারে দেশে, বিদেশে অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁদের অর্থ দিয়েছিলেন অন্য দুই অভিযুক্ত, ইন্দ্রানী মুখার্জি ও পিটার মুখার্জি। তাঁরা নিজেদের কোম্পানি মেসার্স আইএনএক্স মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড ও আইএনএক্স নিউজ প্রাইভেট লিমিটেডের মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রা বিনিময় পরিচালনা আইন লঙ্ঘন সংক্রান্ত বিষয়গুলি মসৃণভাবে মিটিয়ে ফেলাতেও অভিযুক্ত হয়েছেন। আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় দুর্নীতির তদন্তে নেমে ২১ আগস্ট রাতে সিবিআই গ্রেফতার করে চিদম্বরমকে। পরদিন তাঁকে সিবিআই হেফাজতে পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার চিদম্বরম দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করেন, তাঁকে রোজ দিনে একবার বাড়ির রান্না করা খাবার যাতে দেওয়া হয়, সে ব্যাপারে তিহার জেল কর্তৃপক্ষকে অনুমতি দেওয়া হোক।