নয়াদিল্লি: নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের বিক্ষোভ চলছে। আজও কোনও সমাধানসূত্র পাওয়া গেল না। আজ সরকারের সঙ্গে কৃষকদের সংগঠনগুলির ষষ্ঠ দফার বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গতকাল রাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর সর্বভারতীয় কিষাণ সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা জানিয়ে দেন, এই বৈঠক হচ্ছে না। এরপর আজ কৃষকদের সংগঠনগুলি একযোগে কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো খসড়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দিল। কৃষকরা ফের আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। শনিবার দিল্লি-আগরা ও দিল্লি-জয়পুর হাইওয়ে অবরোধ করা হবে বলে জানিয়েছে কৃষকদের সংগঠনগুলি। এরপর সোমবার বিজেপি দফতর ঘেরাও করা হবে বলে জানানো হয়েছে। শুধু দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলেই এই আন্দোলন সীমাবদ্ধ রাখতে নারাজ কৃষক সংগঠনগুলি। সারা দেশে আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।


কৃষক নেতা শিব কুমার কাক্কা জানিয়েছেন, ‘আমরা ১২ ডিসেম্বর দিল্লি-জয়পুর ও দিল্লি-আগরা হাইওয়ে অবরোধ করব। এরপর ১৪ ডিসেম্বর আমরা বিজেপি দফতর ঘেরাও করব। বিজেপি-র নেতা-মন্ত্রীদের বাড়িও ঘেরাও করা হবে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখানো হবে। আমরা দেশের অন্যান্য প্রান্ত থেকেও কৃষকদের দিল্লিতে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’

কাক্কা আরও জানিয়েছেন, ‘সরকার আজ আমাদের কাছে যে প্রস্তাব পাঠায়, তাতে নতুন কিছুই নেই। সংযুক্ত কিষাণ কমিটি এই প্রস্তাব পুরোপুরি খারিজ করে দিয়েছে।’

অপর এক কৃষক নেতা জঙ্গবীর সিংহ অবশ্য বলেছেন, সরকার যদি নতুন করে কোনও প্রস্তাব পাঠায়, তাহলে তাঁদের সংগঠন সেটা ভেবে দেখতে পারে।

এদিকে, কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ করে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার সাংবিধানিক রীতি-নীতির তোয়াক্কা না করে একের পর এক আইন জারি করছে। কেন্দ্রের শাসকরা মেরুকরণের রাজনীতি করছেন এবং ধর্মীয় গোঁড়ামিতে উস্কানি দিচ্ছেন।’

আজ রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করেন বিরোধী নেতারা। ছিলেন রাহুল গাঁধী, শরদ পওয়ার, ডি রাজা, সীতারাম ইয়েচুরি, টি কে এস এলানগোভান।

মূলত পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের কৃষকরা গত ১৩ দিন ধরে দিল্লির বিভিন্ন সীমানায় অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন। নতুন কৃষি আইন বাতিল করার দাবিতে অনড় কৃষকরা। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হলেও, এখনও পর্যন্ত কোনও লাভ হয়নি। সরকার কৃষি আইন নিয়ে আলোচনায় রাজি হলেও, এই আইন প্রত্যাহারে রাজি নয়। সরকারের দাবি, এই আইনের ফলে কৃষকদের লাভ হবে। যদিও সেই দাবি মানতে নারাজ কৃষকরা।