নয়াদিল্লি: আজ মহাত্মা গাঁধীর প্রয়াণ দিবসে অনশন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত কৃষকরা। তাঁরা আজকের দিনটি ‘সদ্ভাবনা দিবস’ হিসেবে পালন করছেন। আজ সকাল ৯টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত অনশন চলবে বলে সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন কৃষক সংগঠনগুলির নেতারা। তাঁরা সবাইকে এই অনশনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।


প্রজাতন্ত্র দিবসে লালকেল্লায় তাণ্ডবের ঘটনার নিন্দা চলছে দেশজুড়ে। সংসদের বাজেট অধিবেশনের আগে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের ভাষণেও উঠে এসেছে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন লালকেল্লায় তাণ্ডবের প্রসঙ্গ। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘লালকেল্লায় জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়েছে। প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষকরা ট্র্যাক্টর র‍্যালি করেছেন। সেই আন্দোলনে ব্যাপক অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল। লালকেল্লায় জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। সংবিধান, যার জন্য আমরা প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করি, আমাদের স্বাধীনতার কথা বলে। কিন্তু এটাও বলে যে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নিশ্চিত করা নাগরিকদের দায়িত্ব।’

গতকাল অবশ্য কার্যত বিরোধীহীন সংসদেই ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি। কারণ, মোদি সরকারের ৩টি নতুন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আগেই রাষ্ট্রপতির ভাষণ বয়কটের ডাক দিয়েছিল কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ ১৮টি বিরোধী দল। আর প্রত্যাশিতভাবেই রাষ্ট্রপতির ভাষণের সঙ্গে একমত নয় তারা।

লালকেল্লায় তাণ্ডবের ঘটনার পিছনে কোনও ষড়যন্ত্র বা উস্কানি রয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। বিরোধী দলগুলি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন রাহুল গাঁধী। তিনি বলেছেন, ‘লালকেল্লায় এতজনকে যেতে দেওয়া হল কেন? তাঁদের কেন আটকানো হয়নি? এত মানুষকে লালকেল্লায় ঢুকতে দেওয়ার পিছনে কী উদ্দেশ্য ছিল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সেই প্রশ্ন করা উচিত।’

কৃষক নেতারাও কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, ‘৩ কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আমাদের যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছিল, সেটা ধ্বংস করার চেষ্টা চলছে। বিজেপি যে কৃষকদের এই আন্দোলন শেষ করে দেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করছে, সেটা এখন পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।’

গাজিপুর, সিঙ্ঘু, টিকরি সীমান্ত থেকে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়ার দাবি উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে গাজিয়াবাদ সীমান্ত খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইত অবশ্য আন্দোলন থেকে সরে আসতে নারাজ। তাঁর দাবি, কৃষকদের বদনাম করার জন্য চক্রান্ত চলছে। কৃষকরা আন্দোলন থেকে সরে আসবেন না।