লখনউ: দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বেড়েই চলেছে। সংক্রমণের নিরিখে প্রতিদিনই নতুন রেকর্ড হচ্ছে। যে কোনও মৃত্যুর সঙ্গেই এখন করোনার যোগ খোঁজা হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের গোন্ডাতেই যেমন একটি মর্মান্তিক ঘটনায় মৃতদের করোনা হয়েছিল কি না, সেটা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ২২ দিনের মধ্যে একটি পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। সবার শরীরেই করোনার উপসর্গের লক্ষণ ছিল বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু তাঁদের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ। ফলে মৃত ব্যক্তিরা করোনা আক্রান্ত ছিলেন কি না, সেটা পরিষ্কার নয়।
একই পরিবারের এতজনের মৃত্যুর ঘটনার সূত্রপাত গত ২ এপ্রিল। গোন্ডার চকরৌতা গ্রামের বাসিন্দা অঞ্জনী শ্রীবাস্তের দাদা হনুমান প্রসাদ প্রথমে মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয়। চিকিৎসার কোনও সুযোগই দেননি তিনি।
পরের ঘটনা ১৪ এপ্রিল। সেদিন মারা যান অঞ্জনীর মা মাধুরী দেবী। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, বড় ছেলের মৃত্যুর শোক সহ্য করতে পারেননি এই বৃদ্ধা। সেই কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
এর দু’দিনের মধ্যে এই পরিবারে তৃতীয় মৃত্যু হয়। ঠাকুমার মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়ি আসেন মাধুরী দেবীর নাতি সৌরভ। তিনি পড়াশোনার জন্য প্রয়াগরাজে থাকছিলেন। তিনি জন্ডিসে আক্রান্ত ছিলেন। বাড়ি ফিরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। গোন্ডার একটি নার্সিংহোমে তাঁকে ভর্তি করা হয়। ১৬ এপ্রিল সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এর পরের ঘটনা আরও মর্মান্তিক। ছেলের মৃত্যুর শোক সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন সৌরভের বাবা-মা। তাঁদের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করতে হয়। সেখানে তাঁদের অক্সিজেন দিতে হচ্ছিল। ২২ এপ্রিল মৃত্যু হয় সৌরভের মা ঊষা শ্রীবাস্তবের। তাঁর বয়স হয়েছিল ৪১ বছর। ২৪ এপ্রিল মৃত্যু হয় সৌরভের বাবা অশ্বিনী শ্রীবাস্তবের। তাঁদের দু’জনেরই বেশ জ্বর ছিল। কিন্তু করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
স্থানীয় বিজেপি নেতারা এই ঘটনার কথা জানার পর জেলা প্রশাসনের কাছে তদন্ত করার দাবি জানান। কিন্তু শ্রীবাস্তব পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, প্রতিটি মৃত্যুই স্বাভাবিক। অঞ্জনী বলেন, তাঁদের পরিবার শোকগ্রস্ত। এই অবস্থায় তাঁরা তদন্ত চাইছেন না। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ থাকায় প্রশাসনের পক্ষেও আর তদন্ত করা সম্ভব হয়নি।