নয়াদিল্লি: দুর্নীতির অভিযোগে নিজেদের বিশেষ স্পেশ্যাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে ফৌজদারি প্রক্রিয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সিবিআই। ঘুষ মামলায় রাকেশ তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআরের বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। সে ব্যাপারে হাইকোর্ট সিবিআইকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিল। ২৯ অক্টোবর পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করতে পারবে না বলে জানিয়েছে আদালত। যদিও মামলার গুরুত্ব ও তাতপর্য্য বিবেচনা করে তাঁর বিরুদ্ধে চলতি তদন্ত স্থগিত থাকবে না বলেও একইসঙ্গে জানিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট।
আস্থানার পাশাপাশি সিবিআইয়ের ডিএসপি স্তরের কর্তা দেবেন্দ্র কুমারও তাঁর বিরুদ্ধে রুজু হওয়া এফআইআর খারিজের আবেদন করে আলাদা পিটিশন দিয়েছেন। আস্থানার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার ব্যাপারে গতকাল তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
দুজনের পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা, তার ডিরেক্টর অলোক ভার্মা ও যুগ্ম ডিরেক্টর এ কে শর্মাকে নোটিস দিয়ে তাঁদের প্রতিক্রিয়া চেয়েছেন বিচারপতি নাজমি ওয়াজিরি। নোটিস দেওয়া হয়েছে কর্মী নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দপ্তরকেও। আমলাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে তাদের সম্মতি লাগে।
হাইকোর্ট ২০ মিনিটের শুনানিতে আস্থানা ও কুমার, দুজনকেই মোবাইল ফোন সহ তাদের কাছে থাকা যাবতীয় নথিপত্র, তথ্য সংরক্ষিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
শুনানিতে সিবিআইয়ের তরফে বলা হয়, আস্থানার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলি মারাত্মক, তারা তদন্ত করছে। দুর্নীতি দমন আইন ও ফৌজদারি চক্রান্ত সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির নানা ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং জালিয়াতি ও তোলাবাজি সংক্রান্ত আরও ধারাও যুক্ত করা হয়েছে।
আস্থানার আইনজীবীরা দাবি করেন, একজন অভিযুক্তের বয়ানের ভিত্তিতে সিবিআইয়ের বিশেষ ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে বেআইনি এফআইআর দায়ের হয়েছে, যার উদ্দেশ্য খারাপ। বিষয়টি খুবই জরুরি গুরুত্বের। বিচারপতি বলেন, খারাপ উদ্দেশ্যের অভিযোগ খতিয়ে দেখার সময় এটা নয়। আস্থানার আইনজীবী বলেন, অফিসারদের বিরুদ্ধে তদন্তে এগতে গেলে কর্মিনিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দপ্তরের অনুমতি লাগে, যা এক্ষেত্রে চাওয়া হয়নি।
এর মধ্যেই আজ সিবিআই ডিরেক্টর অলোক ভার্মা আস্থানাকে যাবতীয় দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিয়েছেন। সূত্রের দাবি, এর ফলে আস্থানা খাতায় কলমে সংস্থার স্পেশাল ডিরেক্টর পদে বহাল থাকলেও যে যে মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন, আর সেগুলির সঙ্গে যুক্ত থাকবেন না। তিনি সিবিআইয়ে একটি বিশেষ তদন্ত দলের (সিট) মাথায় ছিলেন, যারা পলাতক শিল্পপতি বিজয় মাল্য, মাংস রপ্তানিকারী ব্যবসায়ী মঈন কুরেশি ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের মামলা সহ একাধিক হাই প্রোফাইল মামলার তদন্ত করছিল। এবার এগুলির তদন্ত থেকে তাঁকে সরতে হচ্ছে। যদিও সিবিআই সূত্রে দাবি করা হয়, আস্থানার দায়িত্বে কোনও রদবদল হয়নি।


গত ১৫ অক্টোবর নজিরবিহীন ভাবে সিবিআই আস্থানাকে ঘুষ মামলায় জড়িয়ে দাবি করে তিনি তিন কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন। আস্থানা জানান, ঘুষ লেনদেন হয়েছে, তবে তিনি নন, ঘুষ নিয়েছেন সিবিআই ডিরেক্টর। এ নিয়ে প্রবল সংঘাত শুরু হয়ে দুজনের।