ইসলামাবাদ: কাশ্মীর নিয়ে সুর চড়ালেন ইমরান খান। শুক্রবার পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের (পিওকে) রাজধানী মুজফফরাবাদে স্থানীয় বাসিন্দাদের তিনি ডাক দিলেন, নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি)চলুন! অধিকৃত কাশ্মীরের জনসাধারণকে তৈরি থাকতে বলেন তিনি। শীঘ্রই এলওসি অভিমুখে মিছিল করে যাত্রা শুরুর দিনক্ষণ ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী।
ভারত সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার ও গোটা রাজ্যকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভাজনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর কাশ্মীর ইস্যু আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে গিয়ে ভারতকে বিপাকে ফেলতে মরিয়া পাকিস্তান। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তারা সফল হয়নি। এর আগে কাশ্মীরিদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে ‘কাশ্মীর ঘন্টা’ কর্মসূচি পালন করে তাঁর সরকার।
আজ মুজফফরাবাদে সমবেদনা সমাবেশ বা সলিডারিটি সভার আয়োজন করেছিল তারা। সেখানে ইমরান তাঁর ভাষণে বলেন, আমি একজন পাকিস্তানি, একজন মুসলিম ও সর্বোপরি মানুষ বলে কাশ্মীরের দূত হতে চেয়েছি। এটা মানবতার প্রশ্ন। পাক সংবাদ চ্যানেল জিও নিউজ-এর খবর অনুসারে, এদিনের সলিডারিটি সমাবেশ হয়েছে পাকিস্তানের কূটনৈতিক প্রচারের অংশ হিসাবে যাতে ‘কাশ্মীরিদের দুর্দশা সম্পর্কে গোটা বিশ্বের বিবেক জাগ্রত হয়। কাশ্মীরিরা ভারতীয় বাহিনীর হাতে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও হিংসার শিকার’।
ইমরান ভাষণে ভারতকে নিশানা করে বলেন, কোনও সাহসী পুরুষ মহিলা, শিশুর ওপর অত্যাচার করে না। তোমরা যত নিষ্ঠুর আচরণই কর না কেন, সফল হবে না, কারণ ওরা মৃত্যুভয়কে জয় করেছে। ওদের তোমরা হারাতে পারবে না।
আরএসএসকেও নিশানা করেন ইমরান। দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠীটি মুসলিমদের শিক্ষা দিতে চায় বলে অভিযোগ করে বলেন, মোদি বাল্যকাল থেকেই আরএসএসের সদস্য, যে আরএসএস মুসলিমদের প্রতি তীব্র বিদ্বেষ, ঘৃণা পোষণ করে। তাদের শুধু দুটো উদ্দেশ্য, একটা হল ভারত শুধু হিন্দুদের, এটা প্রতিষ্ঠা করা, আরেকটা হল, মুসলিম, খ্রিস্টান ও বাকিরা সমান মর্যাদার অধিকারী নাগরিক নয়। ওদের হৃদয় মুসলিমদের প্রতি ঘৃণায় ভরা কেননা ওরা মনে করে মুসলিমরা শাসন না করলে ভারত সুপার পাওয়ার হয়ে উঠত। কয়েক শতক ধরে ভারতে শাসন চালানোর জন্য মুসলিমদের শিক্ষা দিতে চায় ওরা।
আগুন ঝরানো ভাষণে ইমরান আরও বলেন, আমি ভারত ও মোদি সরকারকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছি, কাশ্মীরের দূত হয়ে গোটা বিশ্বের কাছে যাব, আরএসএসকে উন্মোচিত করব।
এদিকে এর মধ্যেই পাকিস্তানের আইনমন্ত্রক ইমরানকে জানিয়েছে, পাক সরকার কাশ্মীর ইস্যুকে আন্তর্জাতিক ন্যয় আদালতে (আইসিজে) তুলতে পারবে না কারণ এটা সেখানে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ভারত, পাকিস্তানের মধ্যে কোনও চুক্তি নেই। কাশ্মীর প্রশ্নে আইসিজে-তে সরব হবে বলে আগে ঘোষণা করেছিল ইসলামাবাদ।