নয়াদিল্লি: জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও ‘উস্কানিমূলক’ মন্তব্য করার জন্য পাকিস্তানের তীব্র সমালোচনা করল ভারত। বৃহস্পতিবার, সরকারের তরফে এক বিবৃতি প্রকাশ করতে গিয়ে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রভীশ কুমার বলেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে পাকিস্তানি নেতৃত্বের করা সাম্প্রতিকতম মন্তব্যের আমরা তীব্র নিন্দা করছি। অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য। গত তিন সপ্তাহ ধরে ভারতে জিহাদের ডাক ও হিংসার উস্কানি মতো বিভিন্ন প্ররোচনামূলক মন্তব্য করে চলেছে পাকিস্তান।
চলতি মাসের গোড়ায় জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপ করেছে কেন্দ্র। সংসদে পাস হয়ে গিয়েছে জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল। যার ফলে, পূর্বতন জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে ভেঙে পৃথক জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ-- দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল গঠন করা হয়েছে।
এরপরই, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চাপানউতর বেড়ে গিয়েছে। ভারতের এই পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ করেছে ইসলামাবাদ। নয়াদিল্লি পাল্টা জানিয়ে দিয়েছে, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না। এই সত্যটা পাকিস্তান যত দ্রুত মেনে নেবে ততই মঙ্গল।





এই আবহের মধ্যেই, পাকিস্তানের রেলমন্ত্রীর মন্তব্য সেই চোরাস্রোতকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বুধবার শেখ রশিদ আহমেদ জানান, তিনি মনে করেন, চলতি বছরের অক্টোবর ও নভেম্বরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্মুখসমর বেঁধে যেতে পারে। তিনি এ-ও দাবি করেন, এই যুদ্ধ কেবলমাত্র দুদেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। গোটা উপমহাদেশে ছড়িয়ে পড়বে।
এই প্রেক্ষিতে, বৃহস্পতিবার রভীশ কুমার বলেন, আমরা জানি সন্ত্রাসকে সরকারি নীতি হিসেবে ব্যবহার করে পাকিস্তান। প্রতিবার, আমরা আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। আমাদের কাছে নির্দিষ্ট তথ্য আছে যে পাকিস্তান এদেশে জঙ্গিদের ঢোকাতে চাইছে। আমাদের দাবি, নিজেদের দেশে যে সব জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি ফুলে ফেঁপে উঠেছে, সেগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত পাকিস্তানের।
এদিন পাকিস্তানকে ‘স্বাভাবিক প্রতিবেশী’-র মত আচরণের পরামর্শ দেন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র। রভীশ বলেন, পাকিস্তানের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হল ওরা স্বাভাবিক প্রতিবেশীর মতো আচরণ করুক। স্বাভাবিক প্রতিবেশী কী করে? ওরা কখনই প্রতিবেশী রাষ্ট্রে জঙ্গি ঢোকানোর চেষ্টা করে না। স্বাভাবিক আলোচনা, বাণিজ্য চালায়। এটা পাকিস্তানের থেকে মিলছে না।
কাশ্মীর নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জকে লেখা পাকিস্তানের মানবাধিকার মন্ত্রী শিরিন মাঝারির চিঠিকে গুরুত্ব দিতেই নারাজ ভারত। রভীশ কুমার বলেন, ওই চিঠির কোনও মূল্যই নেই। এমনকী, যে কাগজে তা লেখা হয়েছে, সেই কাগজের মানদণ্ডের ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি চিঠির বক্তব্য। ফলত, এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার প্রয়োজনও নেই।