নয়াদিল্লি: ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ অর্থাত্ মসৃণভাবে ব্যাবসা-বাণিজ্য করার পরিবেশ কেমন, এই মাপকাঠিতে এক লাফে ১৪ ধাপ উঠে ১৯০টি দেশের মধ্যে ৬৩ নম্বর স্থান পেল ভারত। অর্থনীতি ঝিমিয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে রেটিং এজেন্সিগুলি তাদের পূর্বাভাসে দেশের আর্থিক বৃদ্ধি কমছে বলে দেখিয়েছিল। তারপর বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাঙ্ক প্রকাশিত তালিকায় ভারতে সামনের সারিতে খানিকটা এগিয়ে আসার ছবি ধরা পড়েছে। টানা তৃতীয়বার শীর্ষ ১০ পারফর্মারের তালিকায়ও রয়েছে ভারত।
নরেন্দ্র মোদি ২০১৪-য় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ তালিকায় ১৪২-তম স্থানে ছিল ভারত। সেখান থেকে ৫ বছরে জিএসটি, ইনসলভেন্সি ও ব্যাঙ্করাপসি কোড সহ বেশ কিছু সংস্কারের জোরে গত বছর ৭৭ নম্বরে উঠে এসেছিল ভারত। ২০১৭-য় ভারত ছিল ১৩০ নম্বরে, ইরান ও উগান্ডারও নীচে।
২০২০-র ইজ অব ডুয়িং বিজনেস রিপোর্টে ভারতের সংস্কারের লক্ষ্যে নেওয়ার প্রয়াসের প্রশংসা করেছে ভারত, ‘তার অর্থনীতির বহরের কথা মাথায় রেখে’। ‘উল্লেখযোগ্য সংস্কারমূলক উদ্যোগ’ নিয়েছে বলে জানিয়ে ভারতের প্রশংসা করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক। বলেছে, ১০টি শীর্ষ উন্নতি করা অর্থনীতির তালিকায় ভারত ও চিনের নেতৃত্ব ব্যাবসা করার সূচক বা মাপকাঠিগুলিকে তাঁদের সংস্কারমূলক কৌশলের মূল উপাদান করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিরও প্রশংসা করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক, যাতে জোর দেওয়া হয়েছে বিদেশি বিনিয়োগ টানা, বেসরকারি ক্ষেত্র, বিশেষত ম্যানুফ্যাকচারিং ও দেশের সামগ্রিক প্রতিযোগিতার পরিবেশ চাঙ্গা করায়।
বিশ্বব্যাঙ্কের উন্নয়নশীল অর্থনীতি শাখার ডিরেক্টর সিমিওন ডজানকভ বলেছেন, এই নিয়ে টানা তৃতীয় বছর ভারত ব্যাবসা-বাণিজ্য করায় প্রথম ১০টিতে রয়েছে। ২০ বছরের এই প্রজেক্টে খুব কম দেশই এমন সাফল্য পেয়েছে। কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে যেসব দেশ এটা করতে পেরেছে, তারা খুব ছোট, কম জনসংখ্যার, সমজাতির দেশ। ভারতই প্রথম দেশ যে এমন সাফল্য পেল। চলতি বছরে ১৪টি ধাপ উঠে এসেছে তারা। ভারত বাদে সেরা ১০ পারফর্মার দেশের তালিকায় আছে সৌদি আরব (৬২), জর্ডন (৭৫), টোগো (৯৭), বাহরিন (৪৩), তাজিকিস্তান (১০৬), পাকিস্তান (১০৮), কুয়েত (৮৩), চিন (৩১) ও নাইজিরিয়া (১৩১)।

২০০৩-এ বিশ্বব্যাঙ্কের সূচনা করা ‘সহজে ব্যাবসা করার পরিবেশ’ সংক্রান্ত রিপোর্টে ১৯০টি দেশের ব্যাবসা সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণ-বিধিব্যবস্থার নিরপেক্ষ মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। তাতে দশটি সূচক, মাপকাঠিতে বিচার করা হয়। যেমন-ব্যাবসা শুরু করা, নির্মাণ সংক্রান্ত পারমিট, বিদ্যুত সংযোগ পাওয়া, সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করা, ঋণ পাওয়া, বিনিয়োগকারীর স্বার্থরক্ষা, কর প্রদান, সীমান্ত পেরিয়ে ব্যাবসা করা, দেউলিয়া হওয়ার সমস্যা সমাধান, চুক্তি কার্যকর করা।