নয়াদিল্লি: ভারতের কোনও সামরিক ঘাঁটিতে বড়সড় হামলার ছক কষছে নিষিদ্ধ পাক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ। সম্প্রতি জইশের শীর্ষ নেতারা পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে বৈঠক করে।


গোয়েন্দা রিপোর্ট মিলতেই হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। দেশের সবকটি সেনাঘাঁটি ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও নিশ্ছিদ্র করা হয়েছে।


গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ভারতে এক কুখ্যাত জঙ্গিকে ঢুকিয়েছে জইশ। ওই জঙ্গির নাম শাকিল আহমেদ। ভারতে একা প্রবেশ করেনি শাকিল। তার সঙ্গে আরও ২ পাক জঙ্গি রয়েছে। পঠানকোট হামলায় জড়িত জইশ জঙ্গিদের সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল শাকিল।


গোয়েন্দা সূত্রের খবর, গত ২০ অগাস্ট পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে হয়েছে জইশ-আইএসআই-এর বৈঠক হয়। সেখানেই মাস্টার প্ল্যান তৈরি হয়। বৈঠকে হাজির ছিল জইশ ও আইএসআই-এর শীর্ষ নেতা-কর্তারা।


জানা গিয়েছে, বৈঠকে উপস্থিত ছিল মৌলানা আব্দুল রৌফ আসঘর। জইশের প্রতিষ্ঠাতা মৌলানা মাসুদ আজহার অসুস্থ হয়ে পড়ার পর থেকে রৌফই দলের সমস্ত দায়িত্ব সামলাচ্ছে।


উপস্থিত ছিল আসঘরের ভাই মৌলানা আম্মর। সম্প্রতি, ভারতীয় বায়ুসেনা অফিসার অভিনন্দন বর্তমানকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য পাক প্রশাসনকে তুলোধনা করেছিল আম্মর। এর পাশাপাশি বৈঠকে উপস্থিত ছিল আইএসআই-এর ২ শীর্ষ কর্তা। বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানের বদলা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে আসঘর ও আম্মর।


গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, পুলওয়ামা হামলার ঠিক একমাস আগে এরকমই একটি বৈঠক হয়েছিল জইশ ও আইএসআই-এর মধ্যে। তাই এবার আরও বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছে দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি।


গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, ২০ আগাস্টে রাওয়ালপিন্ডির বৈঠকের আগে ইসলামাবাদে আরেকটি বৈঠক হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিল জইশের শীর্ষ কর্তা মুফতি আসঘর খান কাশ্মীরি ও কারি জারার। সেখানে ভারতে নাশকতামূলক হামলা বাড়ানোর ওপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।


জানা গিয়েছে, গেরিলা যুদ্ধ কৌশলে পারদর্শী মুফতি আসঘর, বেশ কিছুদিন আগে জইশে যোগ দেয়। অন্যদিকে, ২০১৬ সালে নাগরোটা সেনা ছাউনিতে হামলার মাস্টারমাইন্ড ছিল এই জারার।


গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ভারতে নিরাপত্তাবাহিনী যেভাবে জঙ্গিদমন অভিযানে একের পর এক সন্ত্রাসবাদী খতম করছে, তাতে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে জইশ নেতৃত্ব। তাই, এখন ভারতে বড়সড় হামলা করার ছক কষছে তারা।


প্রসঙ্গত, দু সপ্তাহ আগে, গোয়েন্দারা জানিয়েছিলেন, তিন জইশ জঙ্গি ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো সত্ত্বেও গোপন পাহাড়ি গুহার রাস্তা দিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে জঙ্গিরা।


গত বছর ভারতে স্থানীয় কাশ্মীরি জঙ্গির মাধ্যমে ভয়াবহ হামলা চালায় জইশ। ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, আদিল আহমেদ দার নাম পুলওয়ামার ওই বাসিন্দা বিস্ফোরক-ভর্তি গাড়ি নিয়ে ধাক্কা মারে সিআরপিএফ-এর কনভয়ে। ৪০ জন জওয়ান প্রাণ হারান।


জবাবে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বালাকোট সেক্টরে ঢুকে জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান।