নয়াদিল্লি: নাম বিনোদ কুমার চৌধুরী। কখনও নাক দিয়ে, কখনও চোখ বেঁধে, কখনও আবার হাতের একটা আঙুলের কামালেই ঝড় তুলেছেন কম্পিউটরের কী-বোর্ডে। আর এই গতির নেশায় ইতিমধ্যেই নিজের নামের সঙ্গে নটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড জুড়ে ফেলেছেন তিনি। বিভিন্নভাবে দ্রুত টাইপিং করতে সিদ্ধহস্ত দিল্লির বাসিন্দা এই বিনোদ। 


২০১৭ সালে সমাজবিদ্যায় মাস্টার্স ডিগ্রি পান বিনোদ কুমার চৌধুরী। বর্তমানে দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের কম্পিউটার অপারেটর পদে রয়েছেন বছর ৪১-এর বিনোদ। অফিসে বসে কী-বোর্ডে সাদা-মাটা ডেটা এন্ট্রির কাজ করেন। তবে শুনলে অবাক হবেন যে, এই ব্যক্তিই নটি ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করে ফেলেছেন। একটার পর একটা, নিজেই ভেঙেছেন নিজের রেকর্ড। আর এভাবেই তাঁর সাফল্যের মুকুটে জুড়েছে বিশ্ব সেরার পালক। 


কলেজে কাজের পাশাপাশি নিজের বাড়িতে দুঃস্থ, দরিদ্র ও বিশেষভাবে সক্ষম ছেলেমেয়েদের জন্য একটি কম্পিউটার সেন্টার চালান বিনোদ। সেই কম্পিউটর সেন্টারে ঢুকলেই বিনোদের সংগ্রহ করা মনি-মানিক্যের হদিশ মিলবে। সেই সেন্টারের দেওয়ালেই বিশ্ব রেকর্ডের শংসাপত্রগুলির ছবি টাঙিয়ে রাখা রয়েছে।


সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বিনোদ কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন,  'ছোট থেকেই গতি পছন্দ করেন, নেশার মতো ঝোঁকও ছিল ওদিকে। ছোটবেলায় খেলাধূলা ভালবাসলেও শারীরিক বড় অসুখের কারণে খেলাধূলা নিয়ে বেশি দূর এগিয়ে যেতে পারিনি।'


তবে হাল ছাড়েননি বিনোদ। দিগন্ত বিস্তৃত খেলার মাঠে ঝড়ের গতিতে দৌড়াতে না পারলেও, কী-বোর্ডে কার্যত ঝড় তুলেছেন তিনি। ২০১৪ সালে প্রথম টাইপিং রেকর্ড গড়েন বিনোদ কুমার চৌধুরী। নাক দিয়ে ৪৬.৩০ সেকেন্ডে তিনি ১০৩টি অক্ষর টাইপ করেছিলেন। 


এরপরেই নেশাটা মাথাচাড়া দেয়। বিনোদের কথায়, 'সেবার, রেকর্ডটির জন্য শংসাপত্র পেয়েছিলাম, এটিই আমাকে প্রেরণা জুগিয়েছিল। এরপর আমি আরও রেকর্ডের জন্য অনুশীলন শুরু করি। এক বছর বিভিন্ন রকম অনুশীলন করেছি। এরপর  ২০১৬ সালে দুটি রেকর্ডটি করি।' 


২০১৬ সালে দ্বিতীয় রেকর্ডটি করেন বিনোদ। চোখ বাঁধা অবস্থায় মাত্র ৬.৭১ সেকেন্ডে কী-বোর্ডের সমস্ত অ্যালফাবেড টাইপ করে ফেলেন। আর এরপরেই নিজেই নিজের রেকর্ড ভেঙে ৬.৯ সেকেন্ডেও টাইপ করেছেন কী-বোর্ডের সমস্ত অক্ষর। শেষ নয় এখানেই। মুখে কাঠি ধরে টাইপ করেও বিশ্ব রেকর্ড গড়ছেন এই অপারেটর। ২০১৭ সালে মাত্র মুখে কাঠি ধরে মাত্র ১৮.৬৫ সেকেন্ডে সমস্ত অক্ষর টাইপ করে ফের রেকর্ড গড়েছিলেন বিনোদ কুমার চৌধুরী।