পটনা: লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর বিহারের বিরোধী দল আরজেডি-র অন্দরে ডামাডোলের খবর সামনে এসেছে। এরইমধ্যে আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদবের বড় ছেলে তেজ প্রতাপ যাদবের অনলাইনে নতুন একটি মঞ্চ ‘তেজ সেনা’ চালুর ঘোষণা রাজ্য রাজনীতিতে নয়া মাত্রা যোগ করেছে। পরিবর্তন-পন্থীদের জন্য এই অনলাইন মঞ্চ ২৮ জুন চালুর ঘোষণা করেন তেজ। তাঁর এই মঞ্চ চালু নিয়ে তেজের প্রশংসার ছলে যাদব পরিবারের গৃহ বিবাদ নিয়ে কটাক্ষ করার সুযোগ হাতছাড়া করেনি বিজেপি।
তেজ ট্যুইট করে ওই মঞ্চ চালুর ঘোষণা করেন। ওই ট্যুইটের সঙ্গে প্ল্যাটফর্মের একটি ছবিও পোস্ট করেন তিনি। এতে রয়েছে তেজ ও পাশে আরজেডি-র নির্বাচনী প্রতীক লন্ঠনের একটি ছোট ছবি। তিনি লেখেন, পরিবর্তনের জন্য তেজ সেনা, পরিবর্তনপন্থীদের জন্য একটি অনলাইন মঞ্চ।
এক সপ্তাহ আগেই তেজ রাঁচির একটি হাসপাতালে পশুখাদ্য দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত লালুর সঙ্গে দেখা করে ভগবত গীতা উপহার দিয়ে এসেছিলেন। নীতীশ কুমারের জেডি(ইউ)-র সঙ্গে আরজেডি-র জোট থাকাকালে বিহারের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। তাঁর এই মঞ্চ চালু নিয়ে লালুর ছোট ছেলে তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র নিখিল আনন্দ বলেছেন, তাঁর সাম্প্রতিক এই পদক্ষেপের জন্য তেজ প্রতাপকে অভিনন্দন। এতেই স্পষ্ট যে, তাঁর লড়াই করার ক্ষমতা রয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে আরজেডি ধরাশায়ী হওয়ার পর একমাসেরও বেশি সময় ধরে মিসা ভারতী (লালুর বড় মেয়ে) ও তেজস্বী গা ঢাকা দিয়েছেন। কিন্তু হারের মুখেও উদ্যম দেখিয়েছেন তেজ প্রতাপ।
আনন্দের অভিযোগ, নিজের দল এবং সেই দলের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের ভরাডুবিতে তেজস্বীর নেতৃত্বদানের অক্ষমতা প্রকাশ্যে আসার পর তেজস্বী পালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু দলে ও পরিবারে কোণঠাসা হয়ে যাওযার পরও তেজ প্রতাপ দৃঢ়তার পরিচয় দিচ্ছেন।
আনন্দ বলেছেন, এর থেকেই স্পষ্ট যে, বাবার যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে তুলে ধরেছেন তেজ প্রতাপ। তেজস্বীর পৌঁছনোর আগে আব্দুল বারি সিদ্দিকি যোগ্য বিরোধী দলনেতা হিসেবে স্বাক্ষর রেখেছেন। আরজেডি বিধায়কদের উচিত তেজস্বীর পরিবর্তে তেজ প্রতাপ বা অন্য কাউকে নেতা হিসেবে বেছে নেওয়া উচিত।
আরজেডি সূত্রে বলা হয়েছে, বিজেপির এই প্রশংসা আসলে ঘোলাজলে মাছ ধরার চেষ্টা। ওই সূত্র বলেছে, এনডিএ দুই ভাইয়ের বিবাদ উস্কে দিতে চাইছে। কারণ, এতে আরজেডি-কে শেষ করা যাবে। তেজ প্রতাপ ওই ফাঁদে পা দেবেন না বলেও ওই সূত্রে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
গত এপ্রিলে আরজেডি-র ছাত্র শাখার মেন্টর পদ থেকে পদত্যাগ করে লালু-রাবড়ি মোর্চা গঠন করেন তেজ প্রতাপ। দলকে শক্তিশালী করাই ওই মোর্চা গঠনের লক্ষ্য বলে জানিয়েছিলেন তেজ প্রতাপ। তেজ প্রতাপের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বিদ্রোহী হিসেবে ভোটেও লড়েন। এতে জেহানাবাদের মতো আসনে খেসারত দিতে হয় আরজেডি-কে। ওই আসনে মাত্র ১ হাজার ভোটে হারে আরজেডি।
লোকসভা নির্বাচনে বিহারে একটি আসনও পায়নি আরজেডি। বিরোধীদের মধ্যে কংগ্রেস মাত্র ১ আসন পেয়েছে।