কলকাতা :  বসে পড়েছেন মাটিতে, গায়ের জামা ছেঁড়া। তাঁকে ঘিরে ধরে বাম কর্মী-সমর্থকরা মরিয়া চেষ্টা করছেন সম্বিত ফেরাতে। কিন্তু চোখ বন্ধ মইদুল ইসলামের। কোনক্রমে অস্ফুটে উচ্চারণ করলেন ‘আমি বাঁচবুনি’। জ্ঞান হারানোর আগে এই কথাগুলোই বলেছিলেন মৃত ডিওয়াইএফআই নেতা। আর যে ছবি দেখে শিউরে উঠছেন সকলে।


বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের একযোগে অভিযোগ, পুলিশের মারেই মৃত্যু হয়েছে মইদুলের। অভিযোগ, পুলিশের লাঠির আঘাত লেগেছিল তাঁর কিডনিতে, যে ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেননি মইদুল। যদিও মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, কিডনির কোনও সমস্যা ছিল কি না খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক, তবে ঠিক কোন কারণে মৃত্যু তা স্পষ্ট হবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পরই।


গত বৃহস্পতিবার বাম-কংগ্রেসের নবান্ন অভিযানে ধুন্ধুমারের সাক্ষী থেকেছিল কলকাতা। পুলিশ সেদিন পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের উপর নির্বিচারে লাঠিচার্জ করেছিল। চালানো হয় জলকামান। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের সেল।


নবান্নে অভিযান ঠেকাতে লাঠিচার্জের সময় বাম-কংগ্রেস কর্মীদের মাথাতেও লাঠির বাড়ির ছবি উঠে আসে। পুলিশের প্রাক্তন পদস্ত কর্তা থেকে আইনজীবীরা সকলেই যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।


সবমিলিয়ে বাম-কংগ্রেস সমর্থকরা আপাতত পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বেশ রুষ্ট। আজ কলকাতায় যার রোষ গিয়ে পড়ে পুলিশের উপর। মৌলালির কাছে বিক্ষোভের মাঝে বাম কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের উর্দি ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।


রাতের দিকে ফের পুলিশ ও বাম সমর্থকদের উত্তেজনা আরও একপ্রস্থ বাড়ে মইদুলের মৃতদেহ হস্তান্তর ঘিরে। প্রথমে ঠিক ছিল পুলিশ মর্গ থেকে ডিওয়াইএফআই অফিস পর্যন্ত মিছিল করে নিয়ে আসা হবে মইদুল ইসলামের দেহ ৷ কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ ময়নাতদন্তে দীর্ঘ সময় লাগিয়ে মৃতদেহ ছাড়তে অনেক দেরি করে ৷


এর পর মানিকতলা পর্যন্ত মিছিল করে মরদেহ নিয়ে আসা হয় ডিওয়াইএফআই অফিসে ৷ সেখানে মইদুল ইসলামকে শেষশ্রদ্ধা জানান তাঁর দলের কর্মী-সমর্থকরা। যার পর প্রয়াত ডিওয়াইএফআই নেতার মরদেহ পাঠানো হয় তাঁর বাড়িতে ৷


মইদুলের মৃতদেহ হাতে তুলে দিতে পুলিশ দেরী করেছে অভিযোগ জানিয়েই এরপর লালবাজার পর্যন্ত মিছিলের ডাক দেয় বাম ছাত্র যুব নেতৃত্ব ৷